ঢাকা বুধবার, ১লা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে শাহজালাল বিমানবন্দর


৯ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৫৮

সংগৃহিত

নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মী সংখ্যা। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ, এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সতর্কভাবে দ্বায়িত্বপালন করছেন। দেশের চলমান পরিস্থিতি বিশেষ করে বান্দরবানে কুকি-কুচিনের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে দেশের অন্য কোনো কেপিআই স্থানে যেন নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় সেদিকে লক্ষ রেখেই এই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

বিমানবন্দরে কর্মরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বান্দরবানের ব্যাংক লুট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার পরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ আসে। একইভাবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে একই বার্তা আসে। এরপরপরই মূলত নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক পলাশ বলেন, একদিকে ঈদ অন্যদিকে দেশের চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আমরা আমাদের সদস্যদের তেমন ছুটিও দেইনি। স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য সময়ের চাইতে নিরাপত্তা বেশি।

তিনি বলেন, তিন শিফটে ২৫ জন করে দিনে অতিরিক্ত ৭৫ জন করে সদস্য বাড়তি দ্বায়িত্বে থাকছেন। এছাড়াও আমাদের গোয়েন্দা ইউনিট, সিআরটি ও ডগ স্কোয়াড সবাই সতর্কভাবে দ্বায়িত্বপালন শুরু করেছে। যেহেতু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আমাদের প্রধান বিমানবন্দর সেহেতু অনেকেরই একটি দৃষ্টি এদিকে থাকে। সে কারণে আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে সুরক্ষিত রাখছি।

সরেজিমন দেখা যায়, বিমানবন্দরের প্রবেশের দুই প্রান্ত। একটি মূল অপরটি সিভিল এভিয়েশন গেট। এই দুটি রাস্তার দুই পাশেই দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। জনসাধারণের প্রবেশের সময় তল্লাশি করা হচ্ছে পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঈদের সময় প্রবাসীদের এমনিতেই ঢল নেমেছে আর তাদের স্বজনরা আসায় শাহজালাল এখন লোকে লোকারণ্য। এসব লোকের চাপ সমালিয়ে এক প্রকার কঠিন পরিস্থিতিতে দ্বায়িত্বপালন করছেন এপিবিএন সদস্যরা। আর এসব কিছু মনিটরিং করা হচ্ছে সিসি ক্যামেরা দিয়ে। শাহজালালের বাইরের অন্তত দেড় শতাধিক স্থানে তিনশ’র বেশি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ। টার্মিনাল-২ এর এপিবিএন অফিস থেকে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন একাধিক কর্মকর্তা। কোথাও কোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে বার্তা।

অন্যদিকে এবারের ঈদে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমনাবন্দরের নিরাপত্তায় থাকছে ৯ শতাধিক এপিবিএন সদস্য। ঈদের ছুটিকে ঘিরে কোনোভাবেই যেন নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় সে বিষয়টিকে মাথায় রেখে নেয়া হয়েছে নিরাপত্তা পরিকল্পনা।

জানা যায়, ২০১০ সালে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিটি সদস্যই সততা, নিষ্ঠা আর দায়িত্বশীলতা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরবিচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বিমানবন্দরের শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। বন্ধ হয়েছে চুরি, ছিনতাই। এমনকি হারিয়ে যাওয়া লাগেজও ফিরে পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিমানবন্দরে স্বর্ণ চোরাচালান রোধেও কার্যকরি ভূমিকা রাখছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ।

আর এই কারণে প্রতিবারের ন্যায় এবারের ঈদেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়েছে। ঈদের ছুটির কারণে নিরাপত্তা ঢিলেঢালার কোনো সুযোগ থাকছে না।