ঢাকা শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১

ক্লু না রাখতেই ডাকাতি শেষে মোবাইল পুড়িয়ে ফেলতো ডাকতারা


৮ নভেম্বর ২০২০ ০১:১১

ছবি- নতুনসময়

ডাকাতি শেষে ক্লু না রাখতেই মোবাইল পুড়িয়ে ফেলতো তারা। শুধু কি মোবাইল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে পরিহিত কাপড় চোপড়ও পুড়িয়ে ফেলা হতো। এমনি একটি ডাকাত চক্রের সদস্যদেরকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে এ ধরনের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গত ২৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় আমিনবাজার এলাকায় ইতালী প্রবাসী আমানুল্লাহ (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে প্রাকাশ্যে গুলি করে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ওই ডাকাত চক্র। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-৪। পরে অভিযান চালিয়ে এই ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪।
চক্রের সদস্যরা হলেন মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে স্যার (৩৮) নাসির ওরফে বস্তা (৩৮) ও আব্দুল বারেক শিকদার (৫৫)।

শনিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক। তিনি জানান, মধ্যরাতে সাভারের বিরুলিয়া থেকে এ তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতালি প্রবাসী মো. আমানুল্লাহ (৪০) সস্ত্রীক আমিনবাজারে একটি ব্যাংক থেকে সকাল সাড়ে ১০ টায় টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফেরার পথে ভাকুর্তা লোহার ব্রিজের কাছে পৌঁছালে পেছন থেকে অনুসরণ করে ৩টি মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারে একটি ডাকাত দল। এ সময় ভুক্তভোগীর গাড়ি গতিরোধ করে এলোপাতাড়ি গুলি করে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, ক্লুলেস ঘটনায় সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি গ্রেফতারের দিন থেকেই মাঠে নামে র‌্যাব-৪। তদন্তের শুরু থেকেই ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে ক্যাপ পড়া এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করে৷ এরই সূত্র ধরে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) মধ্য রাতে ডাকাত দলের তিনজনকে গ্রেফতার করে। এ সময় আরও ৬/৭ জন ডাকাত পালিয়ে যায়।

অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্যের একটি করে ছদ্মনাম থাকে। এ দলের অন্যতম সদস্য ব্যাংকে সেদিন ক্যাপ পড়া অবস্থায় ছিল। গ্রেফতারকৃত আসামি বারেক সিকদার (৪৫) মূলত ছিলেন ডাকাতদের অস্ত্র ও ছিনতাইকৃত টাকা বহন করার কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট গাড়ি চালক। তারা ডাকাতির সময় নির্দিষ্ট মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করতো। ডাকাতি শেষে তাদের মোবাইল-সিম ও ব্যবহৃত জামা-কাপড় পুড়িয়ে ফেলতো।

তিনি বলেন, ডাকাতি শেষে ডাকাত দলের প্রতিটি সদস্য আগে থেকে নির্জন স্থানে মিলিত হয় এবং সেখানে তাদের মোবাইল, সিমও জামা-কাপড় পুড়িয়ে ফেলতো। পরবর্তীতে তারা কয়েকদিনের জন্য গাঁ ঢাকা দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এবং কোনো এক সময় আবারো তাদের মূল হোতার নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী একইভাবে ডাকাতি কর্মকাণ্ড চালায়।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতির প্রস্তুতি ধারায় দুটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। ডাকাত চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যন্য আসামিদের গ্রেফতারে সাড়াশি র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।