ঢাকা মঙ্গলবার, ১২ই আগস্ট ২০২৫, ২৯শে শ্রাবণ ১৪৩২


যে কারণে ইমরুলের ডাকনাম ‘পটু’


২২ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:৫৮

বার বার বাদ পড়া অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটারের নাম ইমরুল কায়েস। সতীর্থ কিংবা বন্ধুবান্ধব সবাই ইমরুলকে ‘পটু’ বলেই ডাকে। ক্যারিয়ারের উঠা-নামার ভাগ্য পরীক্ষায় রোববার (২১ অক্টোবর) সবচেয়ে ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছেন এই বাঁহাতি অভিজ্ঞ ওপেনার। হয়তো এই জন্যই তার নামের সঙ্গে পটু বা চালাক নামটা যায়। কিন্তু এই নামের রহস্য নিয়ে ইমরুল নিজে কি বলতে চান?

রোববারের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের নায়ক ইমরুলকে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এই নামের রহস্য নিয়ে প্রশ্ন করলে অনেকটা উচ্চস্বরেই হেসে উঠেন তিনি। হাসতে হাসতেই বলেন,‘পটু নামটা আসলে, ভিক্টোরিয়ার একজন অফিসিয়ালের ছিল। আমাদের এক ক্রিকেটারকে আমি ডাকতাম এই নামটা বলে। ওই নামটা আমার দিকে কখন যে কনভার্ট হয়ে গেছে। আমি জানি না কিভাবে এই নামটা পরে আমার কাছে আসলো।’

গতকাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটা পুরোপুরিই নিজের করে নিয়েছিলেন ইমরুল। অন্যপ্রান্তে যতই উইকেট পড়ছিল ততই যেন আরো দায়িত্ববান হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ওপেনিং করতে নেমে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত লড়ে গিয়েছেন এই বাঁহাতি। ১১৮ বলে তুলে নেন নিজের তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি। তাছাড়া ১৪৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে এনে দেন স্বস্থির পুঁজি। তার ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে ভর করেই ২৮ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই ইমরুলই বারবার অবহেলিত হয়েছেন। ১০ বছরের ক্যারিয়ারে কখনো ধারাবাহিক হতে পারেননি। যতবার জায়গা হারিয়েছেন ততবার নিজের সঙ্গে লড়াই করে আবারও ফিরেছেন। গতকাল ম্যাচ শেষে, সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দলে তার অবস্থান নিয়েই বারবার কথা উঠে।

কিন্তু নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে আক্ষেপ নেই ইমরুলের। তার বিশ্বাস আপ অ্যান্ড ডাউনের মাঝেই একজন ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার। এই প্রসঙ্গে ইমরুল বলেন,‘ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ারে আপ অ্যান্ড ডাউন থাকবেই। কেউ ভালো খেলবে, আবার ভালো খেলতে খেলতে খারাপ খেলবে। এভাবেই ক্যারিয়ার হয়। কেউ কখনও একই ধারাবাহিকতায় টানা খেলতে পারে না। আমারটা হয়ত একটু ভিন্ন হয়ে গেছে। অন্য কেউ এসে ভালো খেলে ফেলেছে, এজন্য আমার হয় নাই। এখন আমি ওগুলো নিয়ে চিন্তা করি না। এখন ভাবি যে যখনই সুযোগ আসবে, দেশের হয়ে খেলায় ভালো অনুভূতি কাজ করে, সুযোগটার জন্য তাই অপেক্ষা করি এবং কঠোর পরিশ্রম করি।’

জাতীয় দলে বারবার কামব্যাক করা নিয়ে অতটুকু ভাবছেনও না ইমরুল। তার চিন্তা সুযোগ পেলে সেটা ভালো খেলে কাজে লাগানো।

‘কামব্যাক নিয়ে নিয়ে বলার কিছু নেই। আমি ভালো খেলেছি, এটাই বড় ব্যাপার। যখনই সুযোগ পাই, চেষ্টা করি ভালো খেলার। বাকিটা যে যেভাবে নেয়, তাদের ব্যাপার। আমি চেষ্টা করি সুযোগ পাওয়ার জন্য।’

দলের বাইরে থাকার সময় ইমরুল সবসময় বিশ্বাস করেন যে, তার ক্যারিয়ার শেষ হতে পারে না। যার জন্য তিনি বাইরে থাকলেও সবসময় নিজেকে দেশের হয়ে খেলার জন্য প্রস্তুত রাখেন।

‘আমার সঙ্গে অনেক ক্রিকেটারের একসঙ্গে অভিষেক হয়েছে, খেলেছে। তারা এখন দৃশ্যপটেও নেই। আমার কাছে মনে হয় যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি যে আমার ক্যারিয়ারে এত দ্রুত শেষ হতে পারে না। আমি সবসময় নিজেকে প্রস্তুত রাখি। যতদিন খেলব, জাতীয় দলে খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখি। যেদিন হয়তো জাতীয় দলে খেলার চান্স থাকবে না, নিজেই বলব ‘থ্যাংক ইউ’।’

এমএ