দাদির কবরের পাশে চিরনিদ্রায় নুসরাত

মাদ্রাসার অধ্যক্ষের যৌন নিপীড়নের বিচার চেয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার শিকার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির দাফন সম্পন্ন হয়েছে। পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাদির কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে প্রায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সোনাগাজীর সাবরি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজার জন্য আনা হয় নুসরাতের মরদেহ। সেখানে তার জানাজায় অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ।
বিকাল পাঁচটার দিকে নুসরাতের মরদেহ নিয়ে গ্রামে এসে পৌছায় তার পরিবার। এ সময় প্রতিবেশি, বন্ধুবান্ধব ও এলাকাবাসীরা ভিড় করে তাকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে।
এদিকে নুসরাতের হত্যাকারীদের ফাঁসি চেয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। জানাজায় অংশ নিয়ে হাজার হাজার মানুষ অশ্রুভেজা নয়নে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানান। এছাড়াও সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নুসরাত হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন। তারা অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি জানিয়েছেন।
নুসরাত এ বছর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানির’অভিযোগ এনে গত মার্চে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা করে নুসরাতের পরিবার।
সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষের অনুসারীরা গত শনিবার পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। শনিবার রাতেই ঢামেক হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
শরীরে ৮০ ভাগ পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেও শারীরিক অবস্থার কারণে তা সম্ভব হয়নি। নুসরাতের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।