ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৬শে জুন ২০২৫, ১৩ই আষাঢ় ১৪৩২


আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কাড়ল সংসদ ভবনের মডেল


১০ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৫৮

ফাইল ছবি

প্রদর্শনীর আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল লুই আই কানের অমর সৃষ্টি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন এর একটি মডেল, যা নজর কাড়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন ও এস্তোনিয়া স্থায়ী মিশনের যৌথ উদ্যোগে গত সোমবার জাতিসংঘের সদর দফতরে দ্বীপ থেকে দ্বীপে- লুই আই কানের সৃজনশীল পদচারণা শীর্ষক একটি চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

স্থপতি ও ফটোগ্রাফার আর্নে ম্যাসিকের পরিকল্পনায় এ চিত্র প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনের চিত্রের পাশপাশি এস্তোনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী মার্কিন স্থপতি লুই আই কানের বিখ্যাত স্থাপত্যগুলোর বিভিন্ন চিত্র। এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রপতি মিজ কারস্টি কালজুলেইড, বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিজ মারিয়া ফার্নান্দে এস্পিনোসা গার্সেজ এবং লুই আই কানের ছেলে ন্যাথানিয়েল কান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী ভাষণে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল বলেন, আজ আমরা বিংশ শতকের অন্যতম সেরা স্থপতি লুই আই কানের এবং তার অমর সৃষ্টি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনাগুলোকে স্মরণ করছি। ভাবতে অবাক লাগে, এস্তোনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা একজন স্থপতি এত দূরের একটি দেশে গিয়ে কীভাবে এমন অনুপম স্বাক্ষর রেখে গেলেন? নিশ্চিতভাবে এটি ছিল তার হৃদয়সৃষ্ট একটি পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই উত্তর-দক্ষিণের বন্ধুত্বের এক অবিনাশি স্মারক। এ স্থাপত্য বাংলাদেশ ও এস্তোনিয়ার মধ্যে সৃষ্টি করেছে অটুট বন্ধুত্বের বন্ধন।

প্রতিমন্ত্রী জাতীয় সংসদ ভবনের বিভিন্ন তথ্যও উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংসদ ভবন এবং একটি স্থাপত্যের বিস্ময়। যাতে ব্যবহার করা হয়েছে দেশীয় উপকরণ; যার নকশায় তুলে ধরা হয়েছে আবহমান বাঙালি স্থাপত্যধারা। যেখানে কৃত্রিম লেকের মাধ্যম দেখানো হয়েছে নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।

যুক্তরাষ্ট্রের সেরা স্থাপত্যবিষয়ক সমালোচক ম্যাকক্যার্টারের উদ্বৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ভবন বিংশ শতকের অন্যতম সেরা স্থাপত্য ভাস্কর্য। এটি বিভিন্ন সভ্যতা ও যুগের স্থাপত্য কর্মের মেলবন্ধনের একটি অনন্য নিদর্শন হলেও বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই নকশার শিকড় গভীরভাবে প্রোথিত।

প্রতিমন্ত্রী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে বলেন, এ ভবন স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীকে পরিণত হয়েছিল, যেমনটি ভেবেছিলেন লুই আই কান। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটি শুধু সংসদ ভবনই নয়; এটি স্থিতিশীলতা, মর্যাদা ও জাতির গর্বের প্রতীক। একজন তরুণ সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি এর প্রথম সংস্কার কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পেরেছিলেন বলে স্মরণ করেন প্রতিমন্ত্রী।

বাংলাদেশের সংসদ ভবনকে লুই আই কানের অন্যতম সেরা স্থাপনা হিসেবে উল্লেখ করে এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রপতি মিজ কারস্টি কালজুলেইড বলেন, কানের সৃষ্ট ভাস্কর্যগুলো ন্যায়, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতীক; যার জন্য জাতিসংঘ কাজ করছে।

লুই আই কানের ছেলে ন্যাথানিয়েল কান তার বাবার স্থাপত্য কর্মের দর্শন -মানবীয় ঐকমত্য’র কথা উল্লেখ করে বলেন, আজকের পৃথিবীতে এটি বড়ই প্রয়োজন।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, এস্তোনিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি সিভেন জুরগেনসনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনৈতিক ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা ইভেন্টটিতে অংশগ্রহণ করেন।

নতুনসময় / আইআর