সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখে তরুণরা

বাংলাদেশ পরিচয়ে আত্মপ্রকাশের ৪৮ বছর পূর্তি উদযাপন করছে পুরো দেশ ও জাতি। সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হচ্ছে স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগ করা জাতির বীর সন্তানদের। এমনই সময়ে নিজেদের ভাবনা, আশা প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে গিয়ে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা বলছেন, যে অন্যায় অত্যাচার আর প্রেক্ষাপটের কারণে মুক্তিযুদ্ধের মতো স্বাধীনতা আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল সেই পরিস্থিতির আরও উন্নতি হওয়া দরকার। পূর্ব পাকিস্তান থাকাকালীন সমাজব্যবস্থায় যে বৈষম্য ও অধিকার হরণের শিকার হয়েছে বাঙালি জাতি তরুণ প্রজন্মের সেই শঙ্কা আজও কাটেনি। তবুও নিরাপদ, বৈষম্যহীন এবং সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখে তরুণরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আনোয়ার হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা বৈষম্যের শিকার হতাম। অন্যায়ভাবে আমাদের ওপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়া হতো। সেই পরিস্থিতির কি উন্নতি হয়েছে? তবে এটাও সত্য যে সবকিছুর পরে আমরা স্বাধীন এক জাতি।
পরিস্থিতি যেমনই হোক দেশকে সমৃদ্ধি আর উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে তরুণ প্রজন্মকেই দায়িত্ব নিতে হবে বলেও মনে করছেন তারা।
ঢাবির আরেক শিক্ষার্থী এবং সদ্য হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত বেগম রোকেয়া হলের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদিকা নুসরাত বাংলানিউজকে বলেন, যে আদর্শকে স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল সেই আদর্শের বাস্তবায়ন এখনও পুরোপুরি হয়নি। কিছু ল্যাকিংস (ত্রুটি) তো রয়েছেই। তবে আমাদেরই এখন সেসব ঠিক করতে হবে। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এই যেমন, দীর্ঘ ২৮ বছর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। আমরা নির্বাচিত হলাম। আমাদের তো এখন কাজ করতে হবে। সামনের দিনগুলোতে দেশের হাল ধরার দায়িত্ব তো এখন আমাদেরই।
একই সঙ্গে, বুদ্ধিজীবী শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি রাষ্ট্রের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে বলেও মনে করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। নিজেদের পরিবার পরিজন ও তাদের ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলে যারা সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করলো তাদের স্বজনদের রাষ্ট্র ভুলতে পারে না বলে দাবি তাদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ জিন্নাত আলী বলেন, আমাদের স্বজনেরা তাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন। আমরা তাদের উত্তরসূরি। কিন্তু আমাদের এখনও বৈষম্যের শিকার হতে হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল। ৭১’ এর ফেব্রুয়ারি মাসেও এখানে অস্ত্র প্রতিক্ষণ নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। যে কারণে পাক বাহিনীর একটি বড় টার্গেট ছিল আমাদেরই কারো বাবা, চাচা, ভাই বা অন্যান্য আত্মীয়। সেই আমাদেরই যদি অবহেলার শিকার হতে হয় তবে তা মানা যায় না। এমনটা হলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে আমরা কি শিখিয়ে যাবো?
নতুনসময় / আইআর