দেশ অনেক এগিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

সরকারের সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘স্বীকার করুন বা না করুন, বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। গত দশ বছরে শহর ও গ্রামের সব পেশার মানুষের জীবনমান বদলে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বড় অর্থনীতির দেশ। গত কয়েক বছরে বিশ্বের যে ক’টি দেশ তাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে নিয়ে গেছে, বাংলাদেশ তাদের অন্যতম। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, জাতিসংঘ মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রশংসা করেন।’
বুধবার (২৩ জানুয়ারি) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির সমালোচনার জবাব দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সমালোচনার প্রয়োজন আছে। সমালোচনা পথচলাকে শাণিত করে। কিন্তু ‘যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা’- সমালোচনা যদি এমন হয়, তবে তা সবার জন্য ক্ষতিকর। সমালোচনা ও সাংঘর্ষিক রাজনীতির অবসান হওয়া প্রয়োজন। আজ হরতাল নামের অস্ত্রটি ভোঁতা হয়ে গেছে। সাংঘর্ষিক রাজনীতি বন্ধে সংবাদকর্মী ও সংবাদপত্রের ভূমিকা অনেক।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিনকে অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বরকে জাতীয় বিপর্যয় দিবস হিসেবে পালনের যে ঘোষণা দিয়েছেন সে বিষয়ে সাংবাদিকরা হাছান মাহমুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত ৩০ ডিসেম্বর দিনটি বিএনপি তাদের ‘বিপর্যয় দিবস’ হিসেবে পালন করতে পরে। কারণ, নির্বাচনে তাদের কিছুই ছিল না, তাদের সবকিছুই ছিল ত্রুটিযুক্ত।’
তিনি বলেন, ‘৩০০ আসনের জন্য ৮০০ মানুষকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। সেখানে মনোনয়নবাণিজ্য হয়েছে। প্রচার ছিল না। ফখরুল সাহেব নির্বাচিত হয়েছেন, এ জন্য তাকে অভিনন্দন। কিন্তু মহাসচিব হিসেবে তিনি পুরোপুরি ব্যর্থ। আমি স্বীকার করি তিনি একজন সজ্জন ব্যক্তি, তবে সুন্দর করে মিথ্যা কথা বলতে পারেন। আগামী উপজেলা নির্বাচনে যদি তারা অংশ না নেয়, তবে তা হবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার মতো আত্মহনের শামিল এবং তা হবে একটা মহাভুল। বিএনপি দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিলেও ব্যক্তিগতভাবে দলটির অনেক নেতাই এই নির্বাচনে অংশ নেবেন।’
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা ক্যামেরার সামনে বলেছেন, এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয়েছে। তবে কিছু কিছু পত্রিকায় পর্যবেক্ষকদের নেতিবাচক মন্তব্য নিয়ে যে প্রতিবেদন করা হচ্ছে, তা তারা কোথায় বলেছে, কবে বলেছে, তার অনুসন্ধান হওয়া প্রয়োজন।’
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘জীবন যুদ্ধক্ষেত্রের মতোই। যুদ্ধক্ষেত্রে পাশের সহযোদ্ধা প্রতিপক্ষের গুলিতে মারা গেলে, তার দিকে একনজর তাকিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়। অসম্ভবকে সম্ভব করা মানুষই সফল মানুষ। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই সামনে এগুতে হয়। মন্ত্রণালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে যেকোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনাদের (সাংবাদিকদের) সহযোগিতা চাই।’
এর আগে সকাল এগারোটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশবরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের অন্তিম শয়ানে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বুলবুলের মহৎ কাজগুলোকে সযত্নে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেবে সরকার।
জাতীয় পিঠা উৎসব ২০১৯ উদ্বোধন
এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পিঠা উৎসবের যুগপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘পিঠা উৎসব আমাদের বাঙালিত্বের প্রকাশ। আর আকাশ সংস্কৃতির যুগে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কালো থাবা রুখতে বাঙালিত্ব লালনই শ্রেষ্ঠ পথ।’
অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে ম. হামিদ, রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, আমানুল হক, সমরজিত রায় চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।