যাত্রাবাড়ী-ডেমরার মহাসড়কে গাড়ি চলবে চার লেনে

রাজধানীতে প্রবেশ কিংবা বাহির হওয়ার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ন একটি মহাসড়ক যাত্রাবাড়ী-ডেমরা। নানা কারনে এই সড়কটিতে নিত্যদিন যানজট লেগেই থাকেই। তাই এই মহাসড়কটিকে চার লেনে উন্নতীকরণে ৩৬৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকার প্রকল্প নিয়েছে সরকার। সম্পূর্ণ সরকারি খরচে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া এই প্রকল্পটি নতুন সরকারের প্রথম একনেক বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভা এ অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় এটিসহ ১ হাজার ৮৯৩ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে আটটি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
তিনি জানান, যাত্রাবাড়ী (মেয়র হানিফ ফাইওভার)-ডেমরা (সুলতানা কামাল সেতু) মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৬৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যাত্রাবাড়ী-ডেমরা-শিমরাইল-নারায়নগঞ্জ সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যা দু’টি প্রধান জাতীয় মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক ও ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়কে সংযুক্ত করেছে।
প্রস্তাবিত সড়কটি আগে থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মূল অংশের অন্তর্ভূক্ত ছিল। কাঁচপুর সেতু ও পোল্ডার সড়ক নির্মাণের ফলে সড়কের এই অংশ থেকে নতুন সড়কে যান চলাচল বেড়ে যায়। যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর অংশটি বর্তমানে ৮ লেন বিশিষ্ট মহাসড়ক যেখানে দেশের পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সকল যান এসে মিলিত হয়। ফলে এই এলাকায় নিয়মিত যানজটের সৃষ্টি হয়।
মেয়র হানিফ ফাইওভারের টোলের কারণে যাত্রাবাড়ী-ডেমরা সড়কাংশে যান চলাচলের অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু সংখ্যক বাণিজ্যিক শিল্প প্রতিষ্ঠান আশেপাশে গড়ে ওঠায় যান চলাচলের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। কাঁচপুর সেতুর যানজট এড়ানোর জন্য সিলেট থেকে আগত যানবাহন তারাবো-যাত্রাবাড়ী সড়কাংশ ব্যবহার করে।
ঢাকা-ডেমরা-শিমাইল সড়কের দৈর্ঘ্য ১০ কিলোমিটার এবং বিদ্যমান প্রস্থ ৭ দশমিক ৩ মিটার। তাই প্রকল্পের আওতায় এই সড়কটি ১৫ দশমিক ৬০ মিটার প্রস্থে ৪ লেন সড়ক হিসেবে নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ধীরগতির যান চলাচলের জন্য প্রস্তাবিত মূল চারলেন সড়কের উভয় পাশে দুই লেন বিশিষ্ট আলাদা সার্ভিস লেন নির্মিত হবে। সড়কটির উন্নয়ন করা হলে স্থানীয় যানবাহন ঝুঁকিপূর্ণ সড়কের রাস্তা পারাপার থেকে বিরত থাকবে এবং দূর্ঘটনার হাত থেকে রা পাওয়াসহ যানজটের তীব্রতা অনেকাংশে কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘একটাই ল্য প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়ানো। উন্নয়নের পথে আমরা সবাই তীর্থ যাত্রী। তাই সবাই মিলেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবো। আমার একটাই ল্য- আর তা হচ্ছে গতি বৃদ্ধি করা। অর্থাৎ ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য যে গতি ছিল তা বাড়ানো হবে।’
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হলো-পিপিআর রোগ নির্মূল এবং ুরারোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প, এর খরচ ধরা হয়েছে ৩৪৫ কোটি টাকা। দারিদ্র বিমোচনের ল্েয পুষ্টি সমৃদ্ধ উচ্চ মূল্যের অপ্রধান শস্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ কর্মসূচি প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২০৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। বিদ্যমান ৭টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন ও নতুন ৬টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৫৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৪৭ কোটি টাকা। গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী সম্প্রসারণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১০২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। নেত্রকোণা জেলার চল্লিশা (বাগড়া)-কুরিয়া- মেদনী-রাজুরবাজার সংযোগ মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৫৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কে বিদ্যমান ৯টি সরু ও জরাজীর্ণ সেতুর স্থলে ৯টি আরসিসি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।###
আইআর