'গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপিকে সংসদে এসে কথা বলা উচিত'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপিকে সংসদে এসে কথা বলা উচিত।’ শনিবার (১২ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রথম যৌথসভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
মানুষের মধ্যে এবারের নির্বাচনে স্বতঃস্ফুর্ততা ছিলো জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পলাতক আসামিকে দিয়ে দল চালানোয় নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি হয়েছে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের উচিত সংসদে এসে কথা বলা।
যদিও তাদের চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি, তবুও তাদের উচিত সংসদে যোগ দেয়া। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয় এই বিশ্বাস নিয়েই মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। এ সময় আগামীতে পরিকল্পনা মতো উন্নয়ন কাজ তরান্বিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তিনি বলেন, বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য না করলে হয়তো আরও কয়েকটি আসন তারা পেতে পারতো। তারপরও একটি দলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান যখন খুন ও দুর্নীতির মামলায় বিদেশে পালাতক তখন তাদের এমন ফল বিপর্যয় স্বাভাবিক। এরমধ্যেও যে কয়েকটি আসনে তারা বিজয়ী হয়েছে, আমি মনে করি গণতন্ত্রের স্বার্থে তাদের সংসদে আসা উচিত।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় যৌথসভা শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতির আগমন উপলক্ষে দলীয় নেতা-কর্মীরা সভা শুরুর আগেই জিরো পয়েন্টে রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্থানীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন।
যৌথসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নেন। পল্টন মোড় হয়ে জিরোপয়েন্ট ও গুলিস্তানগামী যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সভায় বিপুল ভোটে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে টানা তৃতীয় মেয়াদে বিজয়ী করায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশবাসীর প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আরও বেড়ে গেলো। দেশে শান্তি বজায় থাকলে উন্নয়ন করা যায়; সেটা আবারও প্রমাণ হয়েছে।
নির্বাচনের সময় বিভিন্ন ঘটনা এবং প্রাণহানীর জন্য বিএনপিকে দায়ী করেন তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফলে ২৯৮টি আসনের মধ্যে এককভাবে ২৫৭টি আসনে জয় পায় আওয়ামী লীগ। এর বাইরে আওয়ামী লীগের জোট শরিক জাতীয় ২২টি, বিএনপি ৫টি, গণফোরাম ২টি, বিকল্পধারা ২টি, জাসদ ২টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, তরিকত ফেডারেশন ১টি, জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) ১টি এবং স্বতন্ত্র ৩টি আসন পায়।
এছাড়াও গত ৯ জানুয়ারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে স্থগিত হওয়া তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। এ আসনে বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করে।
তবে নির্বাচনে জয়ী হলেও এখন পর্যন্ত শপথ নেয়নি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে সংগঠনটি নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেছে, ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী সদস্যরা শপথ নেবেন না।
নতুনসময়/রাসেল
প্রধানমন্ত্রী