ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৫, ৩রা পৌষ ১৪৩২


রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংসদ সদস্য প্রার্থীদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নীতিমালা জারি


১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:১৯

সংগৃহীত

রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংসদ সদস্য প্রার্থীদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নীতিমালা জারি

রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও রিটেইনার নিয়োগ নীতিমালা, ২০২৫ প্রণয়ন ও জারি করা হয়েছে।

 

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনমূলে এ নীতিমালা জারি করা হয়।

 

এতে বলা হয়েছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা এবং নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রতিরোধে রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও রিটেইনার নিয়োগের লক্ষ্যে সরকার এ নীতিমালা প্রণয়ন ও জারি করেছে।

 

নীতিমালায় ৭টি অধ্যায় ও ১৯টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। নীতিমালার প্রথম অধ্যায়ে সাধারণ বিধান, দ্বিতীয় অধ্যায়ে নীতিমালার উদ্দেশ্য ও ভিত্তি, তৃতীয় অধ্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স সংক্রান্ত বিধান, চতুর্থ অধ্যায়ে রিটেইনার নিয়োগ, পঞ্চম অধ্যায়ে রিটেইনার নিয়োগের পদ্ধতি, ষষ্ঠ অধ্যায়ে নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধির সঙ্গে সামঞ্জস্য এবং সপ্তম অধ্যায়ে আপিল ও ক্ষমতা সংরক্ষণ বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে।

 

লাইসেন্স প্রাপ্তির যোগ্যতা হিসেবে বলা হয়েছে, সরকার কর্তৃক স্বীকৃত রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হইতে হইবে; ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করিতে হইবে; উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থা) কর্তৃক যাচাইকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকি বিদ্যমান থাকিতে হইবে; শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা থাকিতে হইবে; অস্ত্র সংরক্ষণের নিরাপদ ব্যবস্থা থাকিতে হইবে এবং এই নীতিমালার অধীনে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে এই সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত অন্যান্য নীতিমালা ও বিধান প্রযোজ্য হইবে। তবে ব্যক্তিগত আয়কর প্রদান সংক্রান্ত অংশ শিথিলযোগ্য হইবে।

 

লাইসেন্সের মেয়াদ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই নীতিমালার আওতায় অনুমোদনকৃত লাইসেন্সের মেয়াদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার তারিখ হইতে পরবর্তী ১৫ দিন হইবে। উক্ত সময়ের পর এইরূপ লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

 

রিটেইনার নিয়োগের শর্ত সম্পর্কে নীতিমালায় বলা হয়েছে, কেবল প্রকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকিলে রিটেইনার নিয়োগ অনুমোদনযোগ্য হইবে; রাজনৈতিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে কিংবা ভয়ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে রিটেইনার নিয়োগ করা বা অনুমোদন করা যাইবে না; কোনও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থী লাইসেন্স প্রাপ্তির যোগ্য হইলে এবং তিনি আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয়ে অসমর্থ হইলে বা অনিচ্ছুক হইলে বৈধ লাইসেন্সসহ আগ্নেয়াস্ত্র আছে, তা পরিচালনায় সক্ষম এবং কোনো রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থীর রিটেইনার হইতে ইচ্ছুক এমন কোনো ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ রিটেইনার নিয়োগ করিতে পারিবেন। এইরূপ নিয়োগ লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে।

 

যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি নাগরিক ও ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর; অপরাধমুক্ত ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রাপ্ত; আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত (সশস্ত্র বাহিনী বা বাংলাদেশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা অগ্রাধিকার পাইবেন) এবং সরকারি হাসপাতাল হইতে প্রাপ্ত মেডিকেল ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত।

 

নিয়োগের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নির্ধারিত ফরমে আবেদন দাখিল করিবেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দুই কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক যাচাই সম্পন্ন করিবেন; পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার নিরাপত্তা যাচাই তিন কর্মদিবসের মধ্যে সম্পন্ন হইতে হইবে। সব প্রতিবেদন সন্তোষজনক হইলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অবিলম্বে রিটেইনার লাইসেন্স অনুমোদন প্রদান করিবেন।

 

সংখ্যা সম্পর্কে বলা হয়েছে, একজন রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থীর জন্য সর্বোচ্চ একজন রিটেইনার নিয়োগযোগ্য হইবে; নির্দিষ্ট মেয়াদের পর রিটেইনারের মেয়াদও সমাপ্ত হইবে।

 

অস্ত্র ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বলা হয়েছে, রিটেইনারের অনুকূলে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ইস্যু করা হইবে না; রিটেইনার কেবল আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী হইবেন, অস্ত্রসংক্রান্ত সব দায় লাইসেন্সধারীর ওপর বর্তাইবে।

 

আচরণবিধি সম্পর্কে বলা হয়েছে, অস্ত্র বহনকালে সর্বদা লাইসেন্স এবং অনুমোদন সাথে রাখিতে হইবে; এই অস্ত্র ব্যবহার করিয়া কাউকে ভয়ভীতি প্রদর্শন বা হয়রানি করা যাইবে না; নিরাপত্তা ব্যতীত অন্য কোনও কাজে বা উদ্দেশ্যে এই লাইসেন্সের আওতাভুক্ত অস্ত্র ব্যবহার করা যাইবে না; এই লাইসেন্স এবং লাইসেন্সভুক্ত অস্ত্র হস্তান্তরযোগ্য হইবে না; প্রত্যেক লাইসেন্সধারীর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশ তাৎক্ষণিকভাবে পালন বাধ্যতামূলক হইবে।