কমিশন করে কোটার সমাধান করা উচিত

কমিশন করে কোটা সংস্কার বা এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া উচিত বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন শিক্ষকদের আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অচল করে ফেলছে। সরকারের কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না এসব নিরসনের। পুরো শিক্ষাক্ষেত্রই বড় ধরনের নৈরাজ্যের মধ্যে পড়ে গেছে।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, শতকরা দশ ভাগের বেশি কোটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সব দেশেই বিশেষ সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কোটা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা আগে যে কোটা বিরোধী আন্দোলন করেছিল তখনো তারা কোটা বাতিল নয় সংস্কারের কথা বলেছিল। কিন্তু তখন সরকার পুরো কোটা ব্যবস্থাই বাতিল করে দিয়েছিল। সমস্যা হচ্ছে আইনগতভাবে পুরো কোটা ব্যবস্থা বাতিল করা মুশকিল। আমি মনে করি যে, সরকার এসব খেলা না খেলে বা এ ধরনের অস্বচ্ছ তৎপরতা না করে সুবিধাবঞ্চিত মানুষ বা যাদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থান প্রয়োজন এমন জনগোষ্ঠীর মধ্যে শতকরা দশভাগ কোটা ভাগ করে দেয়া উচিত। বাকি নব্বই ভাগ হবে মেধার ভিত্তিতে এমন একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকারের এই অচলাবস্থা নিরসন করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয়ার জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে কোটা থাকতে পারে।
কিন্তু সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটার ভিত্তিতে নয় মেধার ভিত্তিতে হওয়া প্রয়োজন। কোটা বিরোধী আন্দোলন একটি জনপ্রিয় দাবি। কারণ কোটার কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়। একারণে এ আন্দোলনে বিপুল শিক্ষার্থী জড়িত। তাই সরকারের দরকার কোটার বিষয়টি ফয়সালা করে ফেলা। এ বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখলে অশান্তি আরও বাড়বে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি সরকারের উচিত হবে অবিলম্বে আলাপ-আলোচনা করে কোটা সংস্কার কমিশন গঠন করা। এবং অবিলম্বে এটি বাস্তবায়ন করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারের ধারণা তাদের পছন্দের লোকজনই বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছে এজন্য শিক্ষকদের আন্দোলনকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ জন্য এই দাবি নিয়ে সরকার আলোচনাতেও বসবে না। সরকার ভাবছেন তাদের সরকারি শিক্ষকরা এই আন্দোলন অব্যাহত রাখবে না। সরকার একটা ধমক দিলেই তাদের শিক্ষকরা বসে যাবে। কিন্তু এটা আসলে হবে না। কতিপয় শিক্ষক হয়তো পদের লোভে এ আন্দোলন থেকে সরে যেতে পারে কিন্তু ব্যাপক সংখ্যক শিক্ষক এই দাবির পক্ষে আছে। সরকার আলোচনায় না বসলে এ অচলাবস্থা কাটবে না।