ঢাকা শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫, ২১শে আষাঢ় ১৪৩২


কোথাও কোনো অসুবিধা নেই, অবাধে ভোট দিন: সিইসি


১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:০৬

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, আশাকরি ১ ফেব্রুয়ারির ঢাকার দুই সিটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। কোথাও কোনো অসুবিধা নেই। ভোটাররা নির্বিঘ্নে অংশগ্রহণ করবেন। নির্বাচন ভবনে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেন, `সকালে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি, নির্বাচনের সামগ্রী বিতরণ দেখেছি। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কোনো অসুবিধা নেই। মালামাল পৌঁছে গেছে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা বলেছেন কোথাও কোনো রকমের নির্বাচনে বিষয়ে কোনো আশঙ্কা নেই।’ তিনি বলেন, ‘ভোটাররা নির্বিঘ্নে অবাধে অংশগ্রহণ করবেন। তাদের কোনো অসুবিধা নেই। প্রচারের সময় যেভাবে প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন, ভোটার সমর্থকরা যেভাবে রাস্তায় নেমেছে এসেছে, ওটা একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সব দল অংশ নিয়েছে। ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হলে পরিবেশ সুন্দর হয়।

সিইসি বলেন, `প্রস্তুতি শেষ। সামগ্রী চেলে গেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সকলে যার যার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। সব ধরণের বাহিনী তারা নিয়োজিত রয়েছে। তারা তাদের কাজ পরিচালনা করছে।’

কেন্দ্রে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, পক্ষ নিয়ে নেন, ভোটকর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না, এমন হলে কমিশনের ভূমিকা কী থাকবে? প্রশ্নটির জবাবে কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘এজেন্টদের প্রতি প্রথম অনুরোধ, তারা যেন দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। কেউ এসে বললো আর বের হয়ে যাবেন, কেউ তাকে রাখবেন না, তখনই বের হয়ে যাবেন, তা যেন না করেন। এমন ঘটেও, ঘটার সম্ভাবনা যদিও নাই, তবু যদি ঘটেও টহলদার বাহিনী থাকবে, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে, তাদের বলবেন। সুতরাং এটার কোনো সম্ভাবনা নাই। যদি নিজে থেকেই বেরিয়ে না যায় তাহলে কিন্তু এজেন্টদের বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ নাই।

সিইসি বলেন, `আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সময় বলেছি-এজেন্টদের শেল্টার দিতে বলেছি। যখনই তারা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ঢুকবে, তখনই তাদের দেখভাল করার দায়িত্ব কিন্তু যারা ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব থাকবেন। এজেন্ট কাউকে না জানিয়ে অনেক সময় বের হয়ে যায়, তখন বলে যে আমাদের এজেন্ট নেই। এমন হলে তো হবে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যদি থাকে, যদি না শুনে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করবেন। আমাদের পর্যন্ত আসার দরকার নেই।’

দায়িত্ব কিন্তু ভোটকর্মকর্তারা নিতে চাননা ভীতিকর পরিস্থতিতে- এমন পরিস্থিতি করণীয় সম্পর্কে সিইসি বলেন, `আমাদের তিন ধরণের ব্যবস্থা আছে। ভোট দেওয়ার পরে কেউ কেন্দ্রে থাকতে পারবে না। জটলা করতে পারবে না। নিষ্প্রয়োজনে বাইরের কোনো লোক যেন কেন্দ্রে না আসে সে বিষয়ে নিরুৎসাহিত করছি। এতেই কাজ হবে।’

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) কন্ট্রোল ইউনিট ওপেন করার পর ব্যালট ইউনিটে একজনের ভোট আরেকজন নির্দিষ্ট প্রতীকে মারতে পারে-এমন বিষয় সামনে আনলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, `না না না, তা মারতে পারে না। বুথের মধ্যে একজনেরটা মধ্যে আরেকজন পারতে পারে। কিন্তু কে সেটা? যদি সে ভোটার অন্ধ হয়, যদি সে ভোটার অক্ষম হয়, যার হাত ব্যবহার করতে পারে না। আগে যে নিয়মন ছিল সেটাই রাখা হয়েছে। মা যদি অন্ধ হয়, তবে ছেলে যাবে, কিন্তু ব্যবহার হবে মায়েরটা আঙ্গুলের ছাপ, তার ভোটই ওপেন হবে, সেটাতেই ভোট দিতে হবে।

তিনি বলেন, `আগে যেমন ছিনতাই টিনতাই হতো। ইভিএম এমন একটি বিষয়, ভোটারকে সেখানে যেতে হবে। ভোটার না গেলেও ভোট হয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল।’

বিএনপি লেভেল প্লেযিং ফিল্ড নেই বলে অভিযোগ করেছে, সিইসি বলেন-`তারা প্রচার করেছে, মিছিল করেছে, বাড়ি বাড়ি গিয়েছে, কোথায় তাদের বাধা দিয়েছে। এটা ঠিক না।’

সিইসি বলেন, `আশাকরি সুষ্ঠু, নিরপক্ষে ও গ্রহণযোগ নির্বাচন হবে। এতোকিছুর পরে নিরপক্ষে নির্বাচন হবে। সকলের সহযোগীতা দরকার। ইভিএম নতুন একটি প্রযুক্তি। অবশ্যই সকলের সহযোগিতা দরকার। অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ছিলাম। এখন বিশ্বাস করি কমিশনের একটি স্বপ্ন যে, এটার মাধ্যমে ভোটার তার নিজের ভোট দিতে পারবে। এটাকে সফল করার জন্য সকলের সহযোগীতা করতে হবে।’

নতুনসময়/আইকে