মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের জন্মদিন আজ

আজ বুধবার ৭৬ বছরে পা রাখছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি। অনাড়ম্বর জীবনযাপনে অভ্যস্ত আবদুল হামিদের জন্মদিনও পালন করা হবে ঘরোয়া পরিবেশে। বঙ্গভবনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেক কেটে জন্মবার্ষিকী উদযাপন করবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনের কামালপুর গ্রামে ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন আবদুল হামিদ। তার বাবা মো. তায়েব উদ্দিন ও মা মোছা. তমিজা খাতুন। ব্যক্তিগত জীবনে আবদুল হামিদ তিন ছেলে ও এক মেয়ের বাবা।
এদিকে নিজ জন্মস্থান কিশোরগঞ্জে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের জন্মদিন পালনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এরমধ্যে দুপুরে রাষ্ট্রপতির নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে নানা আয়োজনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের জন্মদিন পালন করা হবে।
কামালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু। এরপর ভৈরব কেবি স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। এসএসসি পাস করেন নিকলী উপজেলার গোড়াচাঁদ হাইস্কুল থেকে। কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পাস করার পর ঢাকার সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি নিয়ে কিশোরগঞ্জ বারে আইন পেশায় যোগ দেন তিনি।
১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি। উদয়াস্ত পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে অল্পদিনেই কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের একচ্ছত্র নেতায় পরিণত হন তিনি। এক সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সস্নেহ সান্নিধ্য লাভ করেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত পছন্দে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বিস্তীর্ণ হাওরের দুর্গম এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তদানীন্তন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে (ময়মনসিংহ-১৮) সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। ভারতের মেঘালয়ে রিক্রুটিং ক্যাম্পে এবং সে সময়ে সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সের (মুজিব বাহিনী) সাব-সেক্টর কমান্ডার পদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন আবদুল হামিদ।
১৯৭৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার পর তার নির্বাচনী এলাকা থেকে ৭ বার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে বিজয়ী হয়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর চরম বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশেও আবদুল হামিদ তার বিশ্বাস এবং আদর্শের জায়গা থেকে তিলমাত্র বিচ্যুতি হননি। এ কারণে ১৯৭৬ সালে তাকে কারাবরণ করতে হয়। তবে কোনো নিপীড়নই তাকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে সরাতে পারেনি।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আবদুল হামিদ জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন। পরে একই সংসদে স্পিকারের দায়িত্ব পান। জাতীয় সংসদে সব দলের কাছেই হয়ে ওঠেন অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তি। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে গেলে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদে আবারও তিনি স্পিকার নির্বাচিত হন। দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর আবদুল হামিদ ২০তম রাষ্ট্রপতি হন। গত বছরের এপ্রিলে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় স্বাধীনতা পদক লাভ করেন তিনি।