ঢাকা শুক্রবার, ৪ঠা জুলাই ২০২৫, ২১শে আষাঢ় ১৪৩২


বড় পরিবর্তন আসছে শিক্ষা খাতে!


১ জানুয়ারী ২০২০ ২১:০৭

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সংগতি আনতে শিক্ষায় বড় পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ২০২১ সাল থেকে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রম ও সূচিতে আসছে পরিবর্তন। শিশুদের পড়াশোনার চাপ কমাতে প্রাথমিক স্তরে পাঠ্যবইয়ে বিষয়বস্তু কমিয়ে আনা হচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরে (মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য) বিভাগ বিভাজন থাকছে না। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেও আসছে পরিবর্তন। সর্বশেষ ২০১৭ সালে বিষয়বস্তুর বদলে সৃষ্ট বিতর্কের পর এবার ঢেলে সাজানো হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বলছে, ২০২১ সাল থেকে পরিমার্জিত পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে কাজ চলছে।

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে পাঠ্যবই পরিবর্তন হচ্ছে মাধ্যমিক স্তরে। বিভাগ বিভাজন তুলে দেওয়ায় নবম ও দশম শ্রেণিতে সবাইকে একই পাঠ্যবই পড়তে হবে। এতে একজন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক স্তরে সব বিষয়ে জ্ঞান লাভ করবে। ২০২২ সাল থেকে ‘শিশু শ্রেণি’ নামে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাকে দুই বছর মেয়াদে উন্নীত করায় এ স্তরের পাঠ্যবইয়েও আসবে পরিবর্তন।

চলমান পাঠ্যক্রম অনুযায়ী, নবম ও দশম শ্রেণিতে ২৭টি এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৩৯টি পাঠ্যবই পড়তে হয়। মাদ্রাসায় ধর্মীয় চারটি বিষয় কোরআন, আকাইদ ও ফিকাহ, হাদিস এবং আরবির পাঠক্রমেও পরিবর্তন আসছে। আবার ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে ‘নৈতিক শিক্ষা ও ধর্ম, শারীরিক শিক্ষা ও চারুকলা’ এরকম একই বিষয়গুলোকে একত্রিত করে বই কমিয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বর্তমানে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা মান কমিয়ে ৫০ নম্বরে আনা হবে। বাকি ৫০ নম্বর থাকবে ধারাবাহিক মূল্যায়নের জন্য। পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘প্রাথমিকসহ সব শ্রেণির পাঠ্যবই কমিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। শিশুদের কাছে বই যেন বোঝা না হয়, পাঠে যেন তারা আনন্দ পায়, সেদিকে গুরুত্ব দিয়েই পরিমার্জনের কাজ চলছে।’ বইয়ের কারিকুলাম পরিবর্তন- পরিমার্জনে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান বলেন, ‘ক্লাসে ব্যবহারিক ও ধারাবাহিক মূল্যায়নকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যে বিষয় যে শ্রেণিতে শেখা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেই বিষয় মুখস্থ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। সে কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ পড়ে যায়। আমরা সেই জায়গাটি নিয়েই কাজ করছি। বিষয়বস্তু কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে শিশুদের বইয়ের বোঝা কমে আসবে, পড়াশোনার চাপ কমবে, একই সঙ্গে পরীক্ষার চাপও কমবে।’ ২০২১ সালে প্রথম ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিশুরা নতুন কারিকুলামে তাদের পাঠ্যবই হাতে পাবে। ২০২২ সালে প্রাথমিকের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি; মাধ্যমিকের সপ্তম, নবম এবং উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণির নতুন পাঠ্যবই হাতে পাবে শিক্ষার্থীরা। আবার ২০২৩ সালে পঞ্চম, অষ্টম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নতুন কারিকুলামের পাঠ্যবই হাতে পাবে শিক্ষার্থীরা। আগামী বছর পর্যন্ত বিদ্যমান শিক্ষাক্রমের পাঠ্যই পড়বে শিক্ষার্থীরা।