ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২১শে আগস্ট ২০২৫, ৭ই ভাদ্র ১৪৩২

৮ হাজার কোটি টাকা হাতিয়েছে স্বপনচক্র


২১ আগস্ট ২০২৫ ০৯:৩৩

সংগৃহিত

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি

৫০০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে সিআইডি

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে সিন্ডিকেট করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া চক্রের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অনুসন্ধানে সিন্ডিকেটের প্রধান সদস্য রুহুল আমিন স্বপনের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ৫০০ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে। স্বপন চাঁদাবাজির মাধ্যমে রাতারাতি ৮ হাজার কোটি টাকা সম্পদের মালিক বনে গেছেন।

সিআইডির সদর দপ্তর থেকে বুধবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বুধবার ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ ক্রোকের আদেশ দেন। এতে স্বপনের জনশক্তি রপ্তানির প্রতিষ্ঠান ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের নামে থাকা রাজধানীর বসুন্ধারা আবাসিক, বনানী ও উত্তরা এলাকার সাতটি দলিলে ২৩১ কাঠা জমি রয়েছে। যার দলিল মূল্যই ১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার বেশি। এছাড়াও এসব জমির ওপর নির্মিত স্থাবর সম্পত্তি ও বিভিন্ন অবকাঠামোসহ ৫০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের অপরাপর সদস্যদের বিরুদ্ধে সিআইডির অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। অর্থ পাচার আইনে শিগ্গিরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংঘদ্ধ এ চক্রের কার্যক্রমের বিষয়ে গত বছর সিআইডি প্রধানের কাছে একটি অভিযোগ দেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্ত সদস্যরা। এতে বলা হয়, মালয়েশিয়া জনশক্তি প্রেরণে সিন্ডিকেট করে কর্মীপ্রতি ১ লাখ ৭ হাজার টাকা করে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে। এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা বায়রার সাবেক মহাসচিব ও ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের স্বপন এবং তার সহযোগী আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও নেতা। এমনকি শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের যোগসাজশে মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে চরম অরাজকতা, অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বায়রার সাবেক মহাসচিব স্বপন ও তার সহযোগীরা। এ চক্রে ছিলেন সাবেক ফ্যাসিবাদী সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সংসদ-সদস্য বেনজির আহমেদ, নিজাম হাজারী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সংসদ-সদস্যপ্রার্থী কালা ফিরোজ, বায়রার পলাতক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা আবুল বাশার, আওয়ামী লীগ নেতা মনসুর আহমদ কালাম, আওয়ামী লীগ নেতা মহি উদ্দিন মহি, কাজী এয়ার ইন্টারন্যাশনালের মালিক কাজী মফিজুর রহমান এবং আদিব এয়ার ইন্টারন্যাশনালের মালিক মোবারক উল্লাহ শিমুল।

অভিযোগে আরও বলা হয়, স্বপন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে এবং ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় ছাত্র-জনতা হত্যার হুকুমের আসামি হিসাবে বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। তিনি কানাডার নাগরিক। তার মালয়েশিয়ার পার্টনার দাতো আমিন ও আওয়ামী লীগ আমলে সিন্ডিকেটের সবচেয়ে সুবিধাভোগী কাজী মফিজুর রহমানকে নিয়ে বর্তমান সরকারকে বিব্রত করার জন্য মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগের অনিয়ম, দুর্নীতি ও টাকা পাচারের বিচার না হওয়ায় তারা এ ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ সাহস করছেন।