ঢাকা শনিবার, ২১শে জুন ২০২৫, ৭ই আষাঢ় ১৪৩২

বিয়ে করতে ছাত্রকে তুলে নিয়ে গেল তরুণী


১ আগস্ট ২০১৯ ০৬:৩৫

বাঁশখালীতে নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে বিয়ে করতে অপহরণ করেছে তরুণী এক গার্মেন্ট কর্মী। ঘটনাটি ২০১৭ সালের ২৫ মে হলেও আদালতের নির্দেশে গত ৩০ জুলাই মঙ্গলবার বাঁশখালী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্তে নেমেছেন। তরুণী গার্মেন্টসকর্মী অপহরণ চক্র থেকে অপহরণের ৪ মাস পর অপহৃত মেধাবী ছাত্রটি পালিয়ে ফিরে আসলেও নানামুখি হুমকি-ধমকিতে নাবালক সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা হয়েছে ছাত্রটির বাবা-মা। ওই ঘটনায় ছাত্রটির বাবা বাদি হয়ে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল ১ এ মামলা নং ৬৬৫ দায়ের করেছেন। ছাত্রটি বর্তমানে জরিনা মফজল সিটি কর্পোরেশন কলেজের মানবিক বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র। সে এর আগে অপহরন ঘটনার পরে বাঁশখালীর প্রেমাশিয়া রিজিভিয়া সিদ্দিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় এ গ্রেডে পাশ করেছিল।

মামলার বাদি ও অপহৃত ছাত্রটির বাবা ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের বাড়ি বাঁশখালী উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের রায়ছটা গ্রামে। আমার ছেলে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ (১৪) বাঁশখালীর প্রেমাশিয়া রিজিভিয়া সিদ্দিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ত। ঘটনাটি ২০১৭ সালের মে মাস। ওই সময় আমাদের প্রতিবেশি আয়শা আক্তার নামের এক মেয়ে গার্মেন্টে চাকরি করত। তাদের ঘরে বেড়াতে আসে তারই সহকর্মী নাসিমা আক্তার (২১) নামের এক তরুণী। নাসিমা লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের পূর্ব বাগমুড়া গ্রামের ছালেহ আহমদের কন্যা।

তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ২৫ মে বেড়াতে এসে কৌশলে আমার নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে কৌশলে ফুসলিয়ে অপহরণ করে চট্টগ্রামের আকমল আলী রোড এলাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে কয়েকদফা আমার ছেলেকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাবার সময় কর্ণফুলী পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকা থেকে মাইক্রোসহ অপহরণকারীদের কবল থেকে আমার ছেলেকে ওই বছরের জুনের ২ তারিখ উদ্ধার করে।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার পর ২০১৭ সালের জুলাই মাসের ২০ তারিখ কৌশলে আমার বাড়ি থেকে আবার অপহরণ করে গার্মেন্টস কর্মী তরুণী নাসিমা আক্তার। ওই অপহরণের সময় আরও বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ নাসিমার সাথে ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আমার ছেলেকে না পেয়ে ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল ১ এ মামলা দায়ের করি। এর পর থেকে বেশ কয়েকবার মোবাইলে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। নাসিমার পরিবার মোবাইলে আমাকে জানায়, আমার ছেলেকে নাসিমার সাথে বিয়ে দিতে হবে। নচেৎ আমার ছেলেকে খুন করা হবে। অনেক চেষ্টা করেও ছেলেক উদ্ধার করতে ব্যর্থ হই। এর ৪ মাস পর অপহরণ চক্রের কবল থেকে পালিয়ে আমার ছেলে বাড়ি ফিরে আসে। দাখিল পরীক্ষায়ও অংশ গ্রহণ করে। দাখিল পরীক্ষায় এ গ্রেডে পাশ করেছে। বর্তমানে জরিনা মফজল সিটি কর্পোরেশন কলেজের মানবিক বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র।

বাঁশখালী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আদালতে নির্দেশে তদন্তের জন্য আমি গত মঙ্গলবার ৩০ জুলাই আমার অফিসে উভয় পক্ষকে নোটিশ দিয়ে ডেকেছিলাম। তদন্তের শুনানিতে বাদি পক্ষ আসলেও বিবাদী পক্ষ আসেনি। ছাত্রটিও দেখা গেছে নাবালক। বিষয়টি খুবই জটিল। তাই আবারও বিবাদী পক্ষকে নোটিশ দিয়ে ডাকা হবে। পরে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করা হবে।