ঢাকা শনিবার, ২৮শে জুন ২০২৫, ১৪ই আষাঢ় ১৪৩২


খোলা আকাশের নিচে বানভাসিদের রাত্রি যাপন


২৮ জুলাই ২০১৯ ২০:২৯

নতুন সময়

সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পাড়ের বানভাসি মানুষের রাত কাটে বাঁধের উপর খোলা আকাশের নীচে। গভীর রাতে দেখলে মনে হবে এ যেন স্বপ্নপুরী। নিশ্চুপ চারিপাশ, সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। পরিবারের কেউ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন জিনিসপত্র, হাঁস, মুরগি, ছাগল, ভেড়া বা গরু। একই অবস্থা জেলার সকল বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে।

সদরের ছোনগাছা ইউনিয়নের গোনরগাতি গ্রামের যমুনার বাঁধে গভীর রাতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘুমিয়ে পড়েছে বানভাসি মানুষ, নিস্তব্ধ হয়ে গেছে পৃথিবী, শুধু ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক আর পানির কুলকুল শব্দ। সাথে ক্ষুদ্র জোনাকীর আলো। বন্যার পানি রূপালী জোছনাকেও প্লাবিত করেছে রাতের নিস্তব্ধতাকে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে স্থান পেলেও বেশিরভাগ মানুষই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাস্তার পাশে এবং বাঁধের উপর খোলা আঁকাশের নীচে বসবাস করছে। বাড়ির মালামাল, শিশু সন্তান আর গবাদি পশু নিয়ে তাদের রাত্রি যাপনের সঙ্গী কুকুর বিড়াল।

নির্জনতার মাঝে বানভাসিরা ঘুমে বিভোর, কেউ কেউ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে পরিবারের ঘুমন্ত শিশু থেকে বয়স্কদের। কেউ আবার রাত্রি যাপনের জন্য বেছে নিয়েছে নৌকা।

করুণ অবস্থা গৃহপালিত গরু, ছাগল, ভেড়া আর মুরগিদের। যেখানে মানুষের খাবারের সঙ্কট সেখানে এই সব গৃহপালিত পশুদের খাদ্যের অভাব খুবই স্বাভাবিক। এদের জন্য না আসে ত্রাণ, না ব্যাবস্থা হয় বাসস্থান।

রাত জাগা কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের একসময় ছিল জমিভরা ফসল, গোয়ালভরা গরু, এক টুকরো উঠান, সবজির বাগান। কিন্তু দুই সপ্তাহ আগে হঠাৎ বন্যার পানিতে ডুবে সব শেষ হয়ে যায়। জীবন রক্ষার্থে নিজেদের জান, মাল ও পরিবার সহ বাঁধে কোনরকমে আশ্রয় নিয়েছি। পানি কমতে শুরু করলেও শুকনো খাবার, পানি আর বাসস্থানের জন্য পলিথিনের অভাবে রয়েছি। মেম্বার সামান্য কয়েকটি স্লিপ এনেছিলেন কিন্তু মানুষের তুলনায় তা খুবই নগণ্য। কষ্টের কথা জানাচ্ছিলেন রুখছানা বেগম, মজিবুর রহমান, সরকার মিঞা ও রুস্তম।