ঢাকা রবিবার, ১২ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১


রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিজয়


৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:২৯

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র সিঙ্গাপুর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি সেতু গড়ার কাজ করছে। বর্তমানে সিঙ্গাপুর আসিয়ানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করছে।

সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান রাখাইন সফরের বিষয়ে মিয়ানমার রাজি না হওয়াতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারের ওপর বিভিন্নমহল থেকে চাপ আসছে। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বাতিল করেছে সামরিক প্রশিক্ষণ, তথ্য আদান-প্রদান। স্থাগিত রাখা হয়েছে জেনারেলদের সফর। স্যোসাল মিডিয়া (ফেসবুক) দোষী সেনা কর্মকর্তাদের নিষিদ্ধ করেছে এবং রোহিঙ্গাদের নিয়ে দেওয়া নেতিবাচক সবগুলো পেজ সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

জাতিসংঘ ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি ‘রোহিঙ্গাদের’ ওপর চালানো অভিযানকে ‘স্পষ্ট গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গাদের পক্ষে আলোচনার ঘোষণা দিয়েছে। সেই সাথে আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) রোহিঙ্গাদের উপর চালানো নৃশংসতার বিচারের এখতিয়ার রাখে বলে ঘোষণা রায় দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিজয় হিসেবেই মনে করছেন।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী- মিয়ানমারের সকল অসহযোগিতা, নেতিবাচক প্রচারণা, মিথ্যা ও ভুল ছবি ছাপানোকে স্বাগত জানিয়েছে । সম্প্রতি তিনি বলেন, এটাই তাদের পক্ষে ইতোবাচক ভুমিকা রাখবে।

বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান রাষ্ট্রগুলোর জোট আশিয়ানের সভাপতি ছোট এ দ্বীপ রাষ্ট্রটি একইসঙ্গে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী। এ কারণে তারা এ অঞ্চলের শান্তি, শৃঙ্খলা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে স্থীতিশীলতা ধরে রাখার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।

সিঙ্গাপুর মনে করে, মিয়ানমার সৃষ্ট রোহিঙ্গা পরিস্থিতি বঙ্গোপসাগর, আন্দামান, চীন সাগরসহ এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান ঘটাতে পারে। এতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে সে কারণে তারা দ্রুত এর স্থায়ী সমাধান চান।

এরই অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিঙ্গাপুরের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে বলেও সিঙ্গাপুরকে নিশ্চিত করেন।

১০ সেপ্টেম্বর (সোমবার) ভিভিয়ানের ঢাকা সফরের কথা ছিল। সফরকালে তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করতে চেয়েছিলেন। তিনি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে রাখাইনে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মিয়ানমার সরকার রাজি না হওয়ায় তার এ সফর স্থগিত করা হয়।

এদিকে নেদারল্যান্ডের হেগ ভিত্তিক আইসিসি মিয়ানমারের গণহত্যা ও রোহিঙ্গা বিতাড়ন বিষয়ে বিচার করতে পারবে বলেও এক রায় প্রকাশ করেছে।

ড. ইমতিয়াজ বলেছেন, আগামী জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে মিয়ানমার বিষয়ে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিতে হবে। ১০টি দেশ হয়তো মিয়ানমারের পক্ষে আছে কিন্তু ১৮০টি দেশই রোহিঙ্গাদের পক্ষে। এজন্য বিভিন্নমহল চাপ আসা শুরু হয়েছে। এরপর হয়তো আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো তাদের বয়কট করবে। তখন বিষয়টি আরো জোরালো হলে তখন রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয়ও উঠে আসবে।

এসএমএন