ঢাকা রবিবার, ২২শে জুন ২০২৫, ৮ই আষাঢ় ১৪৩২


ফেরারী আসামী পরিচালিত দলকে জনগণ সমর্থন করবে না: হানিফ


২৫ জানুয়ারী ২০১৯ ০৪:২৮

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, এখনো তারেক রহমান লন্ডনে বসে কলকাটি নারছেন। আমরা দেখছি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি নেতারা লন্ডনে যাচ্ছেন।

মির্জা ফখরুল বলেছেন, লন্ডন থেকে ফিরে এসে তারা নির্বাচনে অংশ নিবেন কী নিবেন না তার সিদ্ধান্ত জানাবেন। সুতরাং বোঝা গেল লন্ডনের সিদ্ধোন্তের বাইরে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘স্বপ্ন ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত ‘একাদশ জাতীয় নির্বাচন এবং জনগণের প্রত্যাশা ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।

তারেক জিয়াকে উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, একজন ব্যক্তি একাধিক দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত, একুশে আগস্ট গ্রেন্ডে হামলায় যাবজ্জীবন দন্ডে দণ্ডিত। এমন একজন ফেরারী আসামীর দ্বারা পরিচালিত দল যতদিন চলবে আর সেই দলকে জনগণ সমর্থন করবে সেদিন বোধহয় আর নেই।

বিএনপির প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আন্দোলনের নামে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, বিএনপির হাত থেকে রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কৃষক থেকে শুরু করে পশুপ্রাণীদের হত্যা করেছে তারা। তাদের এই ভয়াবহ তাণ্ডবতা থেকে তারা মানুষদের কাছ থেকে আরও দূরে সেরে গেছে। এদেশের মানুষ এসব চায় না। মানুষ শন্তি চায়। সেকারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা শান্তির পক্ষে রায় দিয়েছে। উন্নয়নের পক্ষে রায় দিয়েছে। এই নির্ব্চানে জনগণ পরিস্কার বার্তা দিয়েছে যা সবার জানা প্রয়োজন। একাত্তর সালে যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিল। সেই স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির সঙ্গে জনগণ আপোষ করতে পারে না করবে না। যুদ্ধাপরাধী, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তির সঙ্গে জনগণ নেই এই নির্বাচনে এটাও প্রমাণিত হয়েছে।

এই দেশের জনগণ ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে এটাও প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশে সন্ত্রাসী, আদালত কর্তৃক প্রমাণিত আসামী লন্ডনে বসে দল পরিচালনা করা তারেক রহমানের ধারা সরকারের উন্নয়নের ব্যাঘাত ঘটাবে এটার আর সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হানিফ বলেন, তাদের সঙ্গে তো জনগণ নেই তারপরও নির্বাচন নিয়ে বিএনপি শুরু করল আরেক নাটক।জাতি লক্ষ্য করেছে। বিএনপিকে আমরা বলতে চাই- আপনাদের পরাজয়ের কারণ আপনার বিশ্লেষণ করুন। বেরিয়ে আসবে আপনাদের পরাজয় কেন হয়েছে। একদিকে জনবিচ্ছিন্ন কাজ করতে করতে আপনারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন আবার তফফিল ঘোষণার পর শুরু করলেন পুলিশের উপর নির্যাতন। জাতির সামনে আবারও প্রমাণ করলেন যে আপনারা সন্ত্রাসী দলের নেতা। সেই প্রভাব থেকে আপনারা এখনো মুক্ত হতে পারেননি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোননের বিষয়ে তিনি বলেন, মনোনয়ন নিয়ে শুরু করলেন নাটক। করলেন মনোনয়ন বাণিজ্য। যারা আন্দোলন করে সংগ্রাম করে তাদেরকে বাদ দিয়ে লন্ডনে বসে ওখান থেকে যারা টাকা দিয়েছে তাদের মনোনয়ন দিয়েছে তারেক রহমান। মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে বিএনপি দুই দুইটা অফিসে হামলা হয়েছে; পল্টনের অফিস ও গুলশানের অফিস। বিএনপির সিনিয়র নেতারা লাঞ্চিত হয়েছেন। এই কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। সেকারণেই বিএনপির বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মী তারা ভোট করতে নামে নাই। তারা ঘরে বসেছিল। তারা বিএনপির বিপক্ষের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।

হানিফ বলেন, লন্ডনে বাণিজ্য শুধু নয়। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি, গণমাধ্যমে দেখতে পেয়েছি। অডিও ফাস হয়েছে। এতে করে জানা গেছে, বিএনপির মনোনয়নের মূল মদদ দিয়েছে আইএসআই। আইএসআই বিএনপির নির্বাচনের সমস্ত পরিকল্পনা করেছে। এমনকিম অডিওক্লিপে যেটা এসেছে মনোনয়নের তালিকাটাও আইএসআইয়ের দেওয়া। এদেশের জনগণ একাত্তরের সেই পরাজিত শক্তি পাকিস্তানের কোন প্রেতাত্মাকে দেখতে ক্ষমতায় চায় না। যারা পাকিস্তানের মদদে চলে তাদেরকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করা ছাড়া জনগণের সামনে আর কিছুই করার থাকে না।

আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামকে গত বুধবার বলতে শুনলাম এই নির্বাচনের মাধ্যমে না কি আওয়ামী লীগ গণশত্রুকে পরিণত হয়েছে। এবং এখন যদি নির্বাচন দেয় তাহলে নির্বাচনের পক্ষে এক পার্সেন্ট জনসমর্থন নাকি আওয়ামী লীগ পাবে না। এসব শোনার পর হাসি পায়। বিএনপি লজ্জাজনক হারের পর জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দিকবিদিক হয়ে গেছেন।

ডা. জাফর উল্লাহকে বিএনপি থিংক ট্যাংক অভিহিত করে হানিফ বলেন, বিএনপির একজন থিংকট্যাংক আছেন। তিনি খুব খরিতকর্মা। তিনি গত বুধবার টেলিভিশনের একটা স্বাক্ষাৎকারে বলেছেন, তারেক রহমানকে দুই বছরের জন্য বিএনপির রাজনীতি থেকে বিরত রাখতে হবে। দুই বছরের জন্য অন্য কারও কাছে দায়িত্ব দিয়ে দলটাকে গুছিয়ে তারপরে আবার রাজনীতির মাঠে নিয়ে আসতে হবে। কী অকাট্য যুক্তি। এই থিংক ট্যাংকের জন্য বিএনপির আজ এই ভরাডুবি। আমরা পরিস্কারভাবে বলে দিতে চাই-এই বাংলাদেশের জনগণ তারেক রহমানের মতো দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চরিত্রহীন কোন ব্যক্তিকে রাজনীতিক হিসেবে কখনো মানবে না।জাফর উল্লাহ সাহেবকে বিনয়ের সঙ্গে বলি- আপনি বিএনপির থিংকট্যাংক হিসেবে পরামর্শ দেন ঠিকাছে তবে ভাল কিছু পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করেন। দুই বছরের জন্য নয়, এই দুনীতিবাজ তারেক রহমান ও খালেদা জিয়াকে আজীবনের জন্য রাজনীতি থেকে বিদায় করে দেন তাহলে যদি বিএনপি কলঙ্কের ভাগ থেকে মুক্তি পেয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে।

যতদিন তারেক রহমান বিএনপির ক্ষমতায় নেপথ্যে হোক কিংবা সরাসরি হোক বিএনপির কোন ভবিষ্যৎ এদেশের মাটিতে হবে না। জনগণের কাছে বিএনপির চরিত্র উন্মোচিত হয়ে গেছে। তারা কখনো খালেদা-তারেকের নেতৃত্বাধীন বিএনপিকে গ্রহণ করবে না এটা পরিস্কার হয়ে গেছে।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক রেলমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মুজিবুল হক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ শাহে আলম মুরাদ।

/আনু