প্রেমিকাকে লেলিয়ে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ, তারপর ২৬ টুকরো: র্যাব
রংপুরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে (৪২) প্রেমের ফাঁদে ফেলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে টাকা আদায় করার টার্গেট ছিল জরেজ ও তার কথিত প্রেমিকা শামীমা আক্তারের।
আজ শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে কাওরানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফিন।
তিনি বলেন, মূল আসামি জরেজের সঙ্গে শামীমা আক্তারের এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। শামীমাকে জরেজ জানান—তার এক বন্ধুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১০ লাখ টাকা আদায় করা সম্ভব এবং সেটা দুইজন ভাগ করে নেবে। এখানে জরেজ ৭ ও শামীমা ৩ লাখ নেবে। উক্ত পরিকল্পনানুযায়ী শামীমা এক মাস আগে থেকে নিহত আশরাফুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ শুরু করে, তার প্রতি আকৃষ্ট করা অব্যাহত রাখে। তাদের মধ্যে অডিও ও ভিডিও কলে যোগাযোগ চলতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ নভেম্বর জরেজ ও আশরাফুল দু’জনে ঢাকায় এসে শামীমার সঙ্গে দেখা করেন। পরবর্তীতে ঢাকার শনির আখড়ায় ৫ হাজার টাকা দিয়ে তিনজনে একটা বাসা ভাড়া নেন। পরে চেতনানাশক ব্যবহার করে আশরাফুলকে অচেতন করে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে জরেজ এবং ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করে বলে জানান র্যাব।
হত্যা সম্পের্কে তিনি আরও বলেন, শামীমার দেয়া তথ্যমতে ১২ নভেম্বর দুপুরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়লে জরেজ আশরাফুলের হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং মুখ স্কসটেপ দিয়ে আটকে দেয়। জরেজ অতিরিক্ত ইয়াবা সেবন করে উত্তেজিত হয়ে অচেতন থাকা আশরাফকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। অতিরিক্ত আঘাত এবং মুখ স্কসটেপ দিয়ে আটকানো থাকায় শ্বাস না নিতে পেরে ঘটনা স্থলেই আশরাফুল মারা যায়। একই ঘরে জরেজ এবং শামীমা সেই মরদেহের সাথেই রাত যাপন করেন।
পরবর্তীতে ১৩ নভেম্বর মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে জরেজ বাজার হতে চাপাতি ও দুটি ড্রাম কিনে আনেন। এরপর চাপাতি দিয়ে মরদেহটিকে মূলত ২৬ টুকরো করেন এবং দুটি নীল রঙের ড্রামে ভরে রাখেন। হাইকোর্ট মাজার গেইটের নিকট আসলে রাস্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখে মরদেহ ভর্তি ড্রাম দুটি হাইকোর্টের পানির পাম্প সংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশে একটি বড় গাছের নিচে ফেলে, তারা অতিদ্রুত হাইকোর্ট এলাকা হতে একটি অটো যোগে সায়েদাবাদ চলে যায়।
প্রসঙ্গত, এর আগে, গত রাতে র্যাব-৩ কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে শামীমাকে। আর মূলহোতা জরেজকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
