বিসিবি নির্বাচন: তামিমকে চ্যালেঞ্জ দিলেন আসিফ, বসতে চাইলেন মুখোমুখি

বিসিবি নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাহার যারা করেনি, ৬ মাসের মধ্যে তাদের দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে একটি পক্ষ। এমনকি ভিরাট কোহলি-গৌতম গম্ভীরের মাধ্যমে ভারতীয় বোর্ডের কাছে অভিযোগ দিয়েছে সেই পক্ষ— যমুনা টেলিভিশনকে এমনটাই জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তামিমের বলা ‘নির্বাচনে ফিক্সিং’ প্রশ্নে কড়া সমালোচনা করে উপদেষ্টা বলেন, যারা নিজেদের স্বার্থে সকল পক্ষের দুয়ারে যায়, সমঝোতা ভাঙ্গে; তারাই মূলত বিসিবি নির্বাচনের আসল ফিক্সার।
মূলত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতের গুঞ্জন সত্য করে পরদিন সকাল থেকেই বিসিবিতে দৃশ্যমান হতে থাকে নির্বাচনী উত্তাপ। যেখানে আরও একবার সরকারী হস্তক্ষেপের অভিযোগে তামিম ইকবালসহ সরে দাড়ান ১৬ প্রার্থী। সার্বিক অভিযোগের তীর-ই ছিলো ক্রীড়া উপদেষ্টার দিকে। এই প্রসঙ্গসহ সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে যমুনা টিভির সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
তামিমের বলা, ‘মাঠের ক্রিকেটে ফিক্সিং বন্ধের আগে বিসিবি নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করেন’— এমন বক্তব্য পরোক্ষভাবে ক্রীড়া উপদেষ্টাকে নির্দেশ করে। এর জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ফিক্সিংটা তামিম ভাইরা-ই করতে চেয়েছেন। তবে সেখানে ব্যর্থ হয়েছেন। আমাদের কাছে কিছু কল রেকর্ড ও ডকুমেন্টসও রয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে যদি নির্বাচন করেন, ৬ মাস পরে পরিণতি ভোগ করতে হবে। ইঙ্গিতটা জাতীয় নির্বাচন পরবর্তীতে কাওকে হুমকি দেয়ার মতো।’
এমনকি, বিরাট কোহলি-গৌতম গম্ভীরের কাছেও বিসিবি নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে— দাবী ক্রীড়া উপদেষ্টার। বলেন, এমন ঘটনা ঘটেছে। দেশের জন্য লজ্জাজনক হয়, এমন কোনো কাজ করা বা কোথাও অভিযোগ দেয়া উচিত না।
উপদেষ্টা বলেন, এনএসসি’র গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিলর হতে সবশেষ দুই বছর কোনো ক্লাবের সাংগঠিক কাঠামোর সঙ্গে জড়িত থাকতে হয়।’ তামিম ইকবাল নিজেসহ ৬১ জনের মধ্যে কতজন এই শর্ত পূরণে উত্তীর্ণ হবেন বলেও প্রশ্ন রাখেন উপদেষ্টা। বলেন, ‘তবুও নির্বাচনটা করতে হবে, কারন এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। বিসিবিকে আমরা সহযোগিতা করছি, হস্তক্ষেপ নয়।’ প্রয়োজনে তামিম ইকবালের সঙ্গে নথিসহ মুখোমুখি বসার ঘোষণাও দেন আসিফ মাহমুদ।
বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তিনবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল নিজের ছকে নির্বাচন সাজিয়ে জয় নিশ্চিত করতেন তিনি। তবে ৫ আগস্টের পর আকাঙ্ক্ষিত নতুন রূপের বিসিবির স্বপ্ন পূরণ হয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, সেই সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ব্যক্তিরা আসতেন কাউন্সিলর হয়ে যাদের সাথে ক্রীড়া সংস্থার কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা ক্রীড়া সংগঠকদের নিয়ে এসেছি।
কাউন্সিলর ইস্যুতে দুদকের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে ১৫ ক্লাবের আসা-যাওয়া নিয়ে বেশ নাটকীয় অবস্থা ধারণ করে। এরপর সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কোনো ধোঁয়াশা থাকবে কি না— এমন ইস্যুতে উপদেষ্টা বলেন, আদালতের রায়ের প্রেক্ষাপটেই ক্লাবগুলো বাতিল। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন, ক্রিকেট বোর্ড বা সরকারের কোনো ভূমিকা দায়ী নয়।
উল্লেখ্য, ৬ অক্টোবর বিসিবি নির্বাচন। এখনও এনএসসি কোটায় ২ পরিচালক নির্ধারিত করা হয়নি। তবে নির্বাচন ভন্ডুল করতে একটি পক্ষ শেষ পর্যন্ত করবে বলে চেষ্টা করবে বলে আশঙ্কা ক্রীড়া উপদেষ্টার। তবে, নির্বাচনের স্বার্থে যেকোনো পক্ষের সঙ্গে বসতেও প্রস্তুত তিনি।