ঢাকা বুধবার, ৭ই মে ২০২৫, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩২


‘হাসিনা সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক’ টিউলিপের গলার কাঁটা


১০ জানুয়ারী ২০২৫ ১০:০৭

যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে ‘অপহৃত’ আইনজীবী আহমদ বিন কাসেমের বিষয়ে চ্যানেল ৪-এর সাক্ষাৎকারে উত্তেজিত প্রতিক্রিয়া জানান। চ্যানেল ৪-এর সাংবাদিক অ্যালেক্স থমসন তাঁর হস্তক্ষেপ চাইলে, টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, “আমি একজন ব্রিটিশ এমপি এবং লন্ডনে জন্মেছি। আপনি কি বোঝাতে চান আমি বাংলাদেশি?”

এসব কথা বলে টিউলিপ সিদ্দিক ঢাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৎকালীন সরকারের সঙ্গে নিজের তেমন সম্পর্ক না থাকার বিষয়টি বোঝাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সম্পত্তি থেকে তিনি কেন সুবিধা লাভ করেছেন, তার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য বর্তমান সিটি মিনিস্টার টিউলিপ চাপের মুখে রয়েছেন।

যুক্তরাজ্যে দুর্নীতিবিরোধী নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম (কোড) ভেঙেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে দেশটির মন্ত্রিত্বের মানদণ্ড–সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর স্বতন্ত্র উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ম্যাগনাস এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্তেই উপনীত হন না কেন, সমালোচকেরা বলছেন, বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কর্তৃত্ববাদী শাসন থেকে নিজেকে দূরে রাখার যে কথা টিউলিপ বলেছেন, তাতে তাঁদের সঙ্গে এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁর প্রকৃত ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকাভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিকের অবস্থান হলো আওয়ামী লীগ বা বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু সত্য হলো, তিনি আওয়ামী লীগের একজন বড় সুবিধাভোগী ছিলেন।’

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা রোজ হুইফেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ক্ষমতা থেকে অপসৃত হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাছ থেকে তাঁর ভাগনি যে সুবিধা পেয়েছেন, তা নিয়ে অনেক বেশি অনুসন্ধান করা হয়েছে।’

রোজ হুইফেন আরও বলেন, ‘মন্ত্রী এখন তাঁর বিষয়টি স্ট্যান্ডার্ড–বিষয়ক স্বতন্ত্র উপদেষ্টার কাছে পাঠিয়েছেন। এখন এ–সংক্রান্ত সম্পূর্ণ তথ্য জোগাড় করা উচিত, যাতে সম্ভাব্য অযাচিত প্রভাব বা মন্ত্রীর কোড লঙ্ঘন শনাক্ত করা যায়।’

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের জ্যেষ্ঠ এই গবেষণা কর্মকর্তা আরও বলেন, ২০০৯ সালে যখন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসেন, তখন টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। বর্তমানে মুছে ফেলা তাঁর ওয়েবসাইটের একটি সেকশনের তথ্য অনুযায়ী, তিনি আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য ও ইইউ লবিং ইউনিট এবং নির্বাচনী কৌশল দলের অংশ হিসেবে কাজ করেছেন। এমনকি তিনি দলের মুখপাত্র হিসেবে বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ চ্যানেলে উপস্থিত হয়েছিলেন।