ঢাকা বুধবার, ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮শে ভাদ্র ১৪৩১


ট্রাফিকের ভূমিকায় শিক্ষার্থীরা, আইন ভঙ্গ করলে ২ মিনিটের শাস্তি


৮ আগস্ট ২০২৪ ১৯:২৭

ফাইল ফটো

সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্র্যাফিক পুলিশ নেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়কে। ৬ আগস্ট থেকে দেশের সব অফিস খুললেও ট্র্যাফিক পুলিশের তৎপরতা ছিল না। একদিনের মাথায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাস্তায় নেমেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সড়কে ট্র্যাফিক না থাকলেও সচেতনতা ছাড়াচ্ছেন এসব শিক্ষার্থীরাই। এমনকি আইন ভঙ্গ করলে দিচ্ছেন শাস্তিও। যদিও গুরু কোনো দণ্ড না, দুই মিনিট গাড়ি আটকিয়ে দিচ্ছেন তারা।

 

বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে রাজধানীর নীলক্ষেত-নিউমার্কেট, আজিমপুর, শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শিক্ষার্থীদের ট্র্যাফিক পুলিশের ভূমিকায় কাজ করতে দেখা যায়। হাত নাড়িয়ে বাঁশি ফুঁকিয়ে ট্র্যাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। এ সময় কেউ ট্র্যাফিক আইন না মানলে দুই মিনিটের জন্য শাস্তি প্রদান করা হচ্ছে।

 

এ ব্যাপারে একাধিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, যাদের মাথায় হেলমেট নেই কিংবা সিগন্যাল পড়ার পরও গাড়ি নিয়ে যাওয়াতে শাস্তি হিসেবে দুই মিনিট আটকে রাখা হচ্ছে। পরে দুই মিনিট পর গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।

শৃঙ্খলা ফেরাতে রাস্তায় নেমেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন। বিদায়ী কলেজের ২৫ জন সহপাঠী ট্র্যাফিক পুলিশের ভূমিকায় কাজ করছেন ইমতিয়াজ আহম্মেদ। তিনি ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, গত মঙ্গলবার থেকে কাজ করছি। আমিসহ আমার ২৫ জন বন্ধু ট্রাফিকের বিকল্প হিসেবে কাজ করছি। বেশ ভালো লাগছে। রাত ৯টা পর্যন্ত আমাদের কাজ চলবে। 

 

তিনি আরো বলেন, আমরা সাধারণ মানুষকে সচেতনও করছি তারা যেন ট্র্যাফিক মানতে উদ্বুদ্ধ হন। সেই সঙ্গে ট্র্যাফিক না মানলে আমাদের হাতে তো শাস্তি দেওয়ার কোনো বিধান নেই। বড়জোর আমরা তাদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে দুই মিনিট আটকে রেখে দিচ্ছি। দুই মিনিট শেষ হয়ে গেলে, তাদের ট্র্যাফিক নিয়ম যেন তারা মেনে চলে সেই অনুরোধ জানিয়ে গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছি।

 

সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পিছিয়ে নেই রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা। ঢাকা কলেজ রেড ক্রিসেন্টের ইউনিটে কাজ করেন স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শাহ পরাণ। তিনি বলেন, ঢাকা কলেজ থেকে আমরা পাঁচজন রেড ক্রিসেন্ট থেকে এবং সব মিলিয়ে ঢাকা কলেজের দায়িত্ব পালন করছি। আমরা দুই শিফটে রাস্তায় ট্র্যাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে নেমেছি। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪টা এবং ৪ থেকে ৯টা পর্যন্ত; এই শিফটে শিক্ষার্থীরা ভাগে ভাগে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে।

 

রাস্তায় কাজ করছেন একজন ঢাবি শিক্ষার্থী। ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

 

কেউ ট্র্যাফিক রুলস ভাঙলে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে শাহ পরাণ বলেন, মূলত কাউকে শাস্তি দেওয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই বড়-জোর আমরা তাদের সচেতনতা করতে পারি, আমরা সেটিই করছি। যদিও শুনেছি অনেক শিক্ষার্থীরা দুই মিনিটের একটি শাস্তি দিচ্ছেন, আমরা সেটি করছি না।

 

প্রসঙ্গত, সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স ও ভলান্টিয়াররা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সারাদেশের মোট ২২৭টি ট্র্যাফিক পয়েন্টে ৬২০ জন ফায়ার ফাইটার এবং ৫৭টি ট্র্যাফিক পয়েন্টে ২১৫ জন ভলানটিয়ার ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন।a