চট্টগ্রাম কারাগারে মাসে কোটি টাকা আদায়!

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিদের কাছ থেকে প্রতি মাসে প্রায় এক কোটি টাকারও বেশি আদায় করা হয়। অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে আদায় করা এই অর্থ ভাগাভাগি হয় এই কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারী মধ্যে। গত শুক্রবার প্রায় ৫ কোটি টাকা সমপরিমানের নগদ.চেক ও এফডিআরসহ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে ভৈরব রেলওয়ে থানা পুলিশ। তাকে আটকের পরই চট্টগ্রাম জেল প্রশাসনের এই অনিয়মচিত্র বেরিয়ে আসে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম কারাগারে সামনের সাইনবোর্ডে স্বজনদের সাক্ষাতে কোন ফি নেই'- এমন কথা লেখা আছে। অথচ জমিনে বেরোনো বন্দিরা বলছেন, সাক্ষাতপ্রার্থী স্বজনদের দিতে হয় ২০০ থেকে ১৪০০০ টাকা। এছাড়া সুস্থ বন্দিকে অসুস্থ দেখিয়ে কারা হাসপাতালে রাখার সুবিধার জন্য দিতে হয় ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। নাওয়া-খাওয়া, রাতে ঘুমানোসহ নির্দিষ্ট কিছু সুবিধার জন্য সপ্তাহে বন্দিদের গুনতে হয় ন্যূনতম ২ হাজার টাকা। চা নাস্তাসহ ছোট-খাট কেনাকাটার জন্য দিতে হতো বগুহুন বেশি দাম। এসব চলে কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে, যা বাইরে দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই।
চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসকে নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের সদস্যরা। এছাড়া সোহেল রানা বিশ্বাসের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক ও তার স্ত্রীর নামে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সোহেলের কাছে পাওয়া ওই এক কোটি ৩০ লাখ টাকার ব্যাংক চেক খাদ্য সরবরাহকারী তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। তারা খাবার সরবরাহকারী হিসাবে তালিকাভূক্তির জন্য এ ঘুষ দেয়। এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। এসব অনিয়মের ফলে এরই মধ্যে সোহেল রানার বিরুদ্ধে কারা কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। পাশপাশি
কারাগারের সব অনিয়ম বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান কারা কর্মকর্তারা।
কারাগারের বন্দি এমন আসামিদের স্বজনরা জানান, সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামি জামাল, জসিম আর জিল্লুরের তত্ত্বাবাধানে কারাগারের ভেতরে গড়ে ওঠে একটি সিন্ডিকেট। তারাই বন্দিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কারাকর্মকর্তাদের পৌঁছে দিতেন বলে অভিযোগ করেন। সূত্র : ইন্ডিপেন্ডেন্ট
আরকেএইচ