ঢাকা বুধবার, ১লা মে ২০২৪, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩১


দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী


৩ এপ্রিল ২০২৪ ২২:১৬

সংগৃহীত

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ সহযোগিতা চান।

বাসস জানায়, বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তাঁর বক্তব্য লেখক নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর মাধ্যমে ইতোমধ্যেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। আমি চাই বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীন সহায়তা করুক।’

নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা চীনা রাষ্ট্রদূতকে আরও বলেছেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চল এতদিন অবহেলিত ছিল। কারণ, আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো সরকারই এ এলাকার উন্নয়নে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।

এ সময় চীনের রাষ্ট্রদূত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। ইয়াও ওয়েন শেখ হাসিনাকে আগামী জুলাইয়ে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানালে প্রধানমন্ত্রী তা গ্রহণ করেন।

চীন বাংলাদেশের বিশাল উন্নয়ন সহযোগী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, দুই দেশের মধ্যে যে সহযোগিতা চলছে, তা আগামীতে আরও জোরদার হবে। তিনি বলেন, পায়রায় একটি গভীর সমুদ্রবন্দর হবে এবং চীন সে সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে।

শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চলকে দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই এলাকায় কয়েকটি বড় নদী রয়েছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবও অনেক বেশি। আমরা এখন এই এলাকার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।

গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, বিভিন্ন দিক থেকে এটি একটি চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমরা তা কাটিয়ে উঠে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করেছি। আমরা একটি টেকসই সরকার গঠন করেছি এবং দেশে একটি স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়নে চীন বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। যেগুলো এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পন্ন করছেন।

জুলাইয়ে আসন্ন সফর সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে ইয়াও ওয়েন বলেন, আশা করা যায় বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব আরও জোরদার হবে।

ওয়েন আরও বলেন, চীন বাংলাদেশকে কৃষি, গ্রিন এনার্জি, আইসিটি ও উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ ও সাহায্য করতে চায়।

চীনের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে মেট্রোরেলের জন্য অংশীদারিত্ব করতে তাঁর দেশের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, চীন আরও আম, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং চামড়াজাত পণ্য আমদানি করতে আগ্রহী। রাষ্ট্রদূত যুবক, তরুণ নেতা, নারী নেত্রী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতেও আগ্রহ দেখান। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য চীন কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর সরকার বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশে দারিদ্র্য হারের পাশাপাশি শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে সক্ষম হয়েছে। শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল অ্যান্ড নার্সিং কলেজের ব্যবস্থাপনা টিম বুধবার গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পাঞ্চলে শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যাতে এলাকার মানুষ সহজে মেডিকেয়ার সুবিধা পেতে পারে।

কেপিজে হেলথ কেয়ার বেরহাদ সভাপতি ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক চিন কিট চুয়ান দলের নেতৃত্ব দেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

নতুনসময়/এএম


বাংলাদেশ, চীন, প্রধানমন্ত্রী, শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রদূত