ঢাকা শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১


মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিকট শব্দে কাপঁছে টেকনাফ


২৯ মার্চ ২০২৪ ১৯:৫৭

ছবি : নতুন সময়

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গুলি ও প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠল সীমান্তের এ পাড়ে কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলা। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়। এ সময় টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য হাবিব উল্লাহ বলেন, অনেক দিন বন্ধ থাকার পর ভোরে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। আগের দিন মঙ্গল ও বুধবারও গোলাগুলি হয়েছে।

কক্সবাজার হ্নীলা ইউনিয়নের ওয়াব্রাং এলাকার বাসিন্দা ছৈয়দ আলম বলেন, ফজরের নামাজের পর থেকে মিয়ানমারের মর্টার শেলের শব্দে মনে হয়েছে, ভূমিকম্পে যেন বাড়িঘর ধসে পড়ছে। আগে কখনও এত বিকট শব্দ শোনা যায়নি।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে। সীমান্তের ওপারে মংডু শহরের উত্তরে নাকফুরা গ্রাম থেকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে। মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত বিকট শব্দে শোনা গেছে।

তবে দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিস্ফোরণ শোনা যায়নি। মিয়ানমারের এ সংঘাতের প্রভাবে টেকনাফের সেন্টমার্টিন, হোয়াইক্যং, হ্নীলা, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপসহ বিভিন্ন স্থানের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, সেহরির শেষ সময় থেকে মিয়ানমার অভ্যন্তরে গুলি ও মর্টার শেলের আওয়াজ শোনা যায়। বিকট শব্দে ঘুমাতে পারিনি। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের কারণে মানুষ যথেষ্ট আতঙ্কে আছেন।

টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়ার বাসিন্দা আবদুল লতিফ বলেন, মিয়ানমারে থেমে থেমে চলা বোমার বিকট শব্দে কেঁপেছে তাঁর বাড়ি। এমন শব্দ কোনোদি ন শোনেননি। মনে হয়েছে, বাড়ি ধসে পড়ছে। ঘুমাতে পারেননি।

টেকনাফ নাইট্যংপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম জানান, মিয়ানমারে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে বলে তিনি শুনেছেন। অনেক বিকট শব্দ শোনা গেছে।

টেকনাফ পৌরসভার কেকেপাড়ার বাসিন্দা আবদুল জব্বার বলেন, ভোরে কীসের শব্দ হয়েছে, বুঝতে পারেননি। পুরো বাড়ি কেঁপে উঠেছিল।

শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা শামীম বলেন, মিয়ানমারের ওপারে এমন বিকট শব্দ হয়েছে, পুরো দ্বীপ কাঁপছে।

টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য নিয়ে আসা মিয়ানমারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, টানা দেড় মাসের বেশি সময় ধরে রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে রয়েছে আরাকান আর্মি। ইতোমধ্যে মংডু শহরের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব পাশের রাচিডং শহরসহ ১০টির বেশি থানা দখলে নিয়েছে তারা।

টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার এলাকায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও কোস্টগার্ড সতর্ক অবস্থায় আছে। সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদারের পাশাপাশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সতর্ক অবস্থান নেওয়া হয়েছে।

নতুনসময়/এএম


মিয়ানমার, অভ্যন্তর, গুলি, বিস্ফোরণ, শব্দ, সীমান্ত, কক্সবাজার