ঢাকা মঙ্গলবার, ৬ই মে ২০২৫, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩২


কাল ১৩০ পরিবার যাচ্ছেন ‘স্বপ্নের ঠিকানায়’


২৬ অক্টোবর ২০১৮ ২০:৪৭

ছবি সংগৃহীত

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণে ১৩০ পরিবার তাদের জমি-বসতভিটা হারায়। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারের জন্য আবাসন সঙ্কট নিরসনে নেয়া হয় স্বপ্নের ঠিকানা নামে একটি প্রকল্প। আগামীকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব পরিবারের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্বপ্নের ঠিকানার’ চাবি তুলে দেবেন।

এছাড়া আরো ৪টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর ও ১৬টি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলক উন্মোচন করাসহ সুধীসমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

২০১৬ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া মৌজায় কয়লা ভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২২ মার্চ বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রর জন্য ১ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই এলাকার ১৩০টি পরিবার। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজের পাশাপাশি শুরু হয় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন প্রকল্পর প্রক্রিয়া।

১৬ একর জমির ওপর স্বপ্নের ঠিকানা প্রকল্পটি স্বপ্নের মতো করেই নির্মিত। আর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড এনডিই। সেমিপাঁকা ঘরগুলো ২০ শতাংশের মধ্যে, যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের জন্য এক হাজার স্কয়ার ফিটের এবং যারা ২০ শতাংশের বেশী জমি হারিয়েছেন তাদের জন্য ১২শ’ স্কয়ার ফিটের এল প্যাটার্নের ঘর। ঘরের প্রত্যেকটিতে ১৫ দশমিক ৭ ফুট আয়তনে বাথরুমসহ একটি মাস্টার বেডরুম ছাড়াও আরও দুইটি ১৫ ফুট আয়তনের বেডরুম রয়েছে। সাথে থাকছে ১০ দশমিক ৪ ফুট আয়তনের একটি ডাইনিংরুম, ১২ দশমিক ২ ফুটের রান্নাঘর। এ ছাড়া একটি কমন বাথরুম রয়েছে। সামনের বরান্দা লোহার গ্রিল দিয়ে আটকানো রয়েছে। প্রত্যেকটি ঘরের সামনে একটি খালি জায়গা থাকছে, যেখানে শাক-সবজির আবাদ কিংবা গবাদিপশুসহ হাঁস-মুরগি পালনের সুযোগ থাকছে।

পুনর্বাসন পল্লিতে ৩৬ হাজার ৯২৯ এবং ২৪ হাজার ৫৫৪ বর্গফুট আয়তনের দুটি পুকুর খনন করা হয়েছে। যার উত্তর-দক্ষিণ দিকে প্রশস্ত শান বাঁধানো ঘাট রয়েছে। পাশে রাখা হয়েছে বেঞ্চ। এই পল্লিতে নিরাপদ পানির জন্য ৪৮টি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। আধুনিক দ্বিতল মসজিদের কাজও শেষ হয়েছে। ২৩ শতক জমিতে করা হয়েছে মসজিদটি। দ্বিতল কমিউনিটি সেন্টারের নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে। এর নিচতলায় থাকবে ক্লিনিক। রাখা হয়েছে খেলার মাঠ। চারটি দোকান করার মতো স্পেস নিয়ে একটি শপিং সেন্টার করা হয়েছে। রয়েছে ঈদগাঁ মাঠ। একটি স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ।

স্বপ্নের ঠিকানা প্রকল্পটি আসলে স্বপ্নের মতো করে তৈরি করা হয়েছে বলে জানালেন পটুয়াখালীর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘বাগান, গাছপালা সব কিছু অনেক সুন্দরভাবে করা হয়েছে। এখানে সব সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে।’

প্রকল্পটি উদ্বোধন উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানালেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘২৭ অক্টোবর ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ উদ্বোধনের যে প্রস্তুতি রয়েছে সেটা পটুয়াখালীর জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে।’

আরকেএইচ