ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১৬ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


আদানির বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি বাতিলের দাবি জাফরুল্লাহ-সাকি-মান্নার


৬ মার্চ ২০২৩ ০৯:৩৬

ভারতের আদানি পাওয়ার গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চুক্তি বিবেকবান দেশপ্রেমিক মানুষকে হতবাক করেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

রবিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। ‘আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানির অসম চুক্তি বাতিলের দাবিত’ ভাসানী অনুসারী পরিষদ এ সম্মেলন আয়োজন করে।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, বিবেকবর্জিত ও দেশের স্বার্থবিরোধী বিদ্যুৎ চুক্তি আদানি পাওয়ার গ্রুপের সঙ্গে করা হয়েছে। এই চুক্তি বাতিল করতে হবে। বিদ্যুৎ আমদানির নামে দেশের সম্পদ লুট করার এই চুক্তিকে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতীয় সরকারকে উপঢৌকন হিসেবে অভিহিত করেছেন। দেশে দুর্নীতি, দুঃশাসন, অর্থপাচার ও সীমাহীন লুটপাটে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এই চুক্তি মূলত আদানির পকেট ভরার চুক্তি, একপেশে এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

সংগঠনের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের উপদেষ্টা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু প্রমুখ।

বাংলাদেশ তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সাবেক সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, কয়লা খনি, পরিবহনের জাহাজ, বন্দর, রেললাইন ও বিদ্যুৎকেন্দ্র-সবই আদানির মালিকানায়। প্রতিটি ধাপে খরচ হিসাব করবে তারা। তাই এখানে বাড়তি খরচের সুযোগ রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ভারতকে খুশি করতেই আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি করা হয়েছে। এ চুক্তিসহ দেশকে বিপদে ফেলার মতো সব চুক্তির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। উচ্চ ব্যয়ের ঋণনির্ভর প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। এর কোনো দরকার ছিল না। দেশে বিদ্যুৎ চাহিদার চেয়ে দ্বিগুণ উৎপাদন সক্ষমতা আছে। তাই ভারত থেকে আমদানির দরকার নেই। আদানিরও দরকার নেই। ভারতে বৃহৎ পুঁজির বিকাশ হয়েছে। এটার সম্প্রসারণ দরকার। তাই শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশে আসছে তারা। আর বর্তমান সরকারের কারণে বাংলাদেশ তাদের জন্য সুবিধাজনক।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্না বলেন, ঘৃণা করার মতো একটা শাসক ক্ষমতায় আছে। তাদের নিয়ে কোনো ভালো কথা বলার সুযোগ নেই। আদানির চুক্তিটা পুরোপুরি রাজনৈতিক ধান্ধায় করা হয়েছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, জবাবদিহিমূলক সরকার থাকলে আদানির বিদ্যুৎ চুক্তির মতো চুক্তি করা যায় না। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ভারত সরকারকে খুশি করতে যা যা করা হয়েছে, তার মধ্যে একটা হলো আদানির চুক্তি। উনি যাতে সন্তুষ্ট হন, সেটাই চুক্তিতে নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ভোট ছাড়া ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে একদিকে দমনপীড়ন এবং অন্যদিকে বিভিন্ন শক্তিকে খুশি করা হচ্ছে। ভারত যদি একটি গোষ্ঠীকে ক্ষমতায় রাখতে চায়, তাহলে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব থাকবে না। বাংলাদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় তারা সহায়ত ভূমিকা রাখতে পারে।

আইকে