ভোটের ব্যস্ততায় সংগঠিত হচ্ছে জঙ্গিরা

আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তোড়জোর শুরু হয়েছে। আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর মনোযোগও এখন নির্বাচন কেন্দ্রিক। সেই সুযোগে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গিরা। দ্রুত স্থান পরিবর্তনের সুবিধার্থে আস্তানা তৈরির জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককইে বেছে নিচ্ছে।এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
গত শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঠিক পাশেই মীরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় র্যাব। র্যাবের কাছে ওই জঙ্গি আস্তানায় চারজন জঙ্গি অবস্থানের তথ্য থাকলেও পাওয়া যায় দু’জনের মরদেহ। বাকি দু’জনের খোঁজ পায়নি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সৃষ্ট অস্থিরতার সুযোগে জঙ্গিরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। আর এসময়টাকেই জঙ্গিরা সংগঠিত হওয়ার সুবিধাজনক সময় হিসাবে বেছে নিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
চট্টগ্রামের টিআইবি-সনাক'র সভাপতি এডভোকেট আকতার কবীর চৌধুরী বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচনকে সামলানোর কাজে ব্যস্ত থাকায় এই সময়টা জঙ্গি সুযোগ হিসেবে বেছে নিতে পারে।'
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর অব. এমদাদুল ইসলাম বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি তাদের দক্ষতা দেখাতে পারে এবং তৎপর থাকে তাহলে তারা বেশি সুবিধা করতে পারবে না বলে আমার বিশ্বাস। এমনকি নির্বাচনেও কোনো হুমকি হতে পারবে না।'
গত বছর মীসরাই এবং সীতাকুন্ডে জেএমবি’র তিনটি আস্তানার সন্ধান পেয়েছিলো পুলিশ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এই স্থানকে বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে প্রধান দু’টি কারণ চিহ্নিত করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
এ বিষয়ে র্যাব সদর দপ্তরের পরিচালক (গণমাধ্যম) মুফতি মাহমুদ খান বলেন, 'মহাসড়কের পাশে হলে পরিবহন সুবিধা পাওয়া যায়। রাতের বেলায় নেমেই আস্তানায় চলে যেতে পারবে। আবার কেউ এখান থেকে যদি অন্যকোনো জায়গায় যেতে চাই তাহলে সহজে গাড়িতে উঠতে পারে।
তিনি আরো বলেন, 'বহন এবং ব্যবহারে সুবিধার কারণে জঙ্গিরা এ কে টুয়েন্টি টু’র মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করছে বলে র্যাবের কাছে তথ্য রয়েছে।
হলি অর্টিজানে তারা এটি ব্যবহার করেছিলো। তার আগে র্যাবের সঙ্গে একটি খন্ড যুদ্ধেও তারা এটি ব্যবহার করেছিলো। কারণ এ কে টুয়েন্টি টু'র ফায়ার বেশি এবং ছোট।'
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেন, 'আমার ধরণা অর্থ সংগ্রহের জন্য তারা মহাসড়ক সংলগ্ন স্থানগুলো তারা বেছে নিচ্ছে। বিভিন্ন লোককে ম্যানেজ করে যাতে নাশকতা করতে পারে।'
২০০৮ সালের নির্বাচনের আগ মুহর্তে’ও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করেছিলো জঙ্গি সংগঠন জেএমবি। সে সময় চট্টগ্রাম থেকে বিপুল পরিমান গ্রেনেডসহ মাসুম নামে এক জঙ্গি নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। মূলত রাজনৈতিক সমাবেশে হামলার জন্যই এসব গ্রেনেড মজুদ করা হয়েছিলো বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছিলো জঙ্গি নেতা মাসুম।
আরকেএইচ