ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


অনলাইনে ৩৬ টাকায় পাওয়া যাবে পেঁয়াজ


২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:২৭

অনলাইনে সাশ্রয়ীমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় কার্যক্রম ‘ঘরে বসে স্বস্তির পেঁয়াজ’ উদ্বোধন করলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। পেয়াজের দামবৃদ্ধি ঠেকাতে এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের অনলাইনে পেয়াজ পেতে এই কর্মসূচী গ্রহণ করেছে সরকার। সীমিত ও নির্বাচিত কিছু অনলাইন শপের মাধ্যমে পেয়াজ কিনতে পারবে জনসাধারণ। আপাতত ৩৬ টাকা প্রতিকেজী পেয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৫ কেজী পেয়াজ কিনতে পারবেন। তবে আপাতত এই সীমা ৩ কেজী নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি অর্ডারের ডেলিভারী মূল্য ঠিক করে দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা।

রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১ টায় মন্ত্রী এই কার্যক্রমের উদ্ভোধন ঘোষনা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুগ্মসচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান।

আপাতত ভাবে ৮টি অনলাইন প্রতিষ্টান ঢাকা ও চট্টগ্রামে অনলাইনে পেয়াজ বিক্রি করতে পারবে। আজ প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত টিসিবির অনলাইন ডিলারশিপ পেতে যাচ্ছে যে ৫টি প্রতিষ্ঠান। সেগুলো হলো হলো, চালডাল, স্বপ্ন অনলাইন, সিন্দাবাদ ডট কম, সবজিবাজার ডট কম, যাচাই ডট কম। এছাড়া আগামীকাল থেকে বিডিসোল, একশপ ও অন্য একটি প্রতিষ্ঠান এই ধারাবাহিকতায় যুক্ত হতে পারে। এছাড়া উইন্ডি নামে নারী উদ্যোক্তাদের একটি কমন ফ্লাটফর্ম থেকেও টিসিবি’র পেয়াজ বিক্রি করা হবে।

চাহিদা ও যোগানোর উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আরো বাড়বে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আপাতত দৈনিক আধাটন করে পেয়াজ পাবে এবং তিনদিন পর পর টিসিবি থেকে পেয়াজ সংগ্রহ করবে। অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ হাজার টন পেয়াজ বিক্রি প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। এর পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। প্রতিষ্ঠানগুলোর গুদামঘর, ডেলিভারী ক্যাপাসিটি, ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ইক্যাবের সুপারিশ বিবেচনায় টিসিবির ডিলারশিপ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া পুরো প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, টিসিবি ও ই-ক্যাব একটি অভিন্ন বিধিমালা বা এসওপি প্রনয়ন করেছে। যা মেনে চলতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান বাধ্য থাকবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী বলেন, আমি ক্রেতা সাধারণকে অনুরোধ করব। আপনারা আতংকিত না হয়ে অনলাইনে নির্ধারিত পরিমাণ পেঁয়াজ কিনুন। একটি পরিবারের জন্য ১ সপ্তাহ কত কেজী পেঁয়াজ লাগে সেভাবে সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আপনারা এই সীমা মেনে চলুন। কোথাও কোনো অনিয়ম দেখা দিলে ই-ক্যাব বা এখানে যে সমন্বয় কমিটি করা হয়েছে তাদেরকে জানান। তারা দ্রুত সমাধান করবে।

বিশেষ অতিথি ডব্লিওটিও সেল এর মহাপরিচালক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্নসচিব জনাব হাফিজুর রহমান বলেন, সরকারের সাথে প্রাইভেট সেক্টরের সহযোগিতার ভিত্তিতে কল্যাণের একটা উদাহর হয়ে থাকবে ‘ঘরে বসে স্বস্তির পেঁয়াজ’ দামে এই উদ্যোগ। এর আগেও আমরা এসব উদ্যোগে সফল পেয়েছি। সরকারের একটি কল্যাণমূলক সেবা টিসিবি’র পণ্য। এটা আরো বেশী মানুষের কাছে পৌছে দেয়ার জন্য ই-ক্যাবের সাথে মিলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছে।

টিসিবি’র চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান বলেন, টিসিব সাধারণস ট্রাকসেল এর মাধ্যমে স্বল্প আয়ের মানুষদের নিত্যপণ্য সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু অনলাইন শপগুলো থেকে পেয়াজ বিক্রয়ের মাধ্যমে যেসব ক্রেতা হয়তো লাইন ধরে পণ্য ক্রয় করেন না তাদের জন্য এই সুযোগ তৈরী হলো। সরকারের এই সেবা অনলাইনে বিস্তৃতির মাধ্যমে আরো বেশী মানুষকে সংযুক্ত করবে।

অতিরিক্ত সচিব, আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অনুবিভাগ, জনাব হাফিজুর রহমান বলেন, আজ পেঁয়াজ দিয়ে শুরু হলো আগামীতে অনলাইন থেকে ক্রেতারা টিসিবির অন্যান্য পন্য হয়তো পাবেন। আপাতত পাইলট হিসেবে এই কার্যক্রম শুরু করলেও সঠিকভাবে পরিচালিত হলে ভবিষ্যতে এর পরিধি আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্তি সচিব ওবায়দুল আজম বলেন, অনলাইনে আমমেলার মাধ্যমে যে যাত্রা শুরু হয়েছে তার সুফল আমরা আজ পেঁয়াজের মাধ্যমে পাচ্ছি। জনগনের পাশে থাকতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টা সব সময় নিজেদের ছাড়িয়ে যাবার। আমাদের টিম কমার্স সদা জাগ্রত থেকে মানুষের সেবা করে যাবে। ভবিষ্যতে অনলাইনে নিত্যপণ্যের সেবা পরিধি আরো বাড়বে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব এসব উদ্যোগের পাশে থেকে ত্বরান্বিত করবে।

ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, আজ আমরা মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য সরকারের সহযোগিতায় অনলাইনে পেয়াজ নিয়ে এসেছি। যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করবে তারা প্রত্যেকে আমাদের বলেছে তারা নিয়ম মেনে চলবে। যে বিধিমালা দেয়া হয়েছে তা অনুসরণ করবে। এবং ব্যবসার চেয়ে মানুষের সেবাকে গুরুত্ব দিবে।

চালডালের ডিরেক্টর ইশরাত নাবিলা বলেন, সরকার জনগনের পাশে দাড়িয়েছে, আমরা সরকারের পাশে দাড়িয়েছি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যেভাবে তড়িৎ সাড়া সেবা দিচ্ছে তার এই কার্যক্রমের সাথে জড়িত না থাকলে জানতে পারতাম না। আমাদের সরকারী অনেক ব্যবস্থা ক্রমশ উদার হচ্ছে টিসিবি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর প্রমাণ।