পুলিশের কেউ ড্রাগের সঙ্গে যুক্ত থাকলে অপসারণ করা হবে
পুলিশের কোনো সদস্য ড্রাগের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাকে বাংলাদেশ পুলিশ থেকে অপসারণ করা হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
আজ শনিবার রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা আঞ্চলিক পুলিশ লাইন্সের নবনির্মিত ব্যারাক ভবন উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি।
আইজিপি বলেন, ‘পুলিশের কোনো সদস্য ড্রাগ খাবে না, ড্রাগের সাথে কোনোভাবেই সম্পর্কযুক্ত থাকবে না।’
ক্যানসার চিকিৎসার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি ক্যানসার আক্রান্ত হলে আক্রান্ত অংশ কেটে অপসারণ করা হয়। পুলিশের কোনো সদস্য যদি ড্রাগের সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকে তাহলে নির্দয়ভাবে তাকেও বাংলাদেশ পুলিশ থেকে অপসারণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘উন্নত দেশের পুলিশ হতে হলে পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে। পুলিশকে মাদকমুক্ত হতে হবে, পুলিশকে মানুষের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেওয়া যাবে না। মানুষের প্রতি নিষ্ঠুরতা নয়, মানবিক আচরণ করতে হবে। জনগণের সেবায় নিয়োজিত পুলিশ অফিসার ও ফোর্সের সার্বিক কল্যাণও নিশ্চিত করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। তখন পুলিশ এ ভাইরাস প্রতিরোধে সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা নাক করে জনগণের সুরক্ষায় কাজ শুরু করেছে। এখন পুলিশের ২ লাখ সদস্যের প্রত্যেকের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী রয়েছে।’
করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা মাত্র দুই সপ্তাহে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে ২৫০ বেড থেকে ৫০০ বেডের কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করেছি। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় একটি উন্নত বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে। স্কুল-কলেজ এবং হোটেল ভাড়া করে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য যেখানে চার সপ্তাহের কম সময়ে পিসিআর মেশিন স্থাপন করা যায় না, সেখানে মাত্র ১২ দিনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতলে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে বিভাগীয় হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।’
এর ফলে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং মৃত্যুর হার কমছে। তিনি বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত হয়ে জাতীয় পর্যায়ে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩ ভাগ। পুলিশে মৃত্যুর হার মাত্র দশমিক ৫ ভাগ।’
আইজিপি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ কীভাবে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’ জাতীয়ভাবেও এ হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য সবাইকে ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ জানান তিনি।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের আবাসিক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে আমরা স্বল্পমেয়াদে অস্থায়ী ভিত্তিতে ব্যারাক ভবন নির্মাণ করেছি। ডেমরায় করা হয়েছে, উত্তরাতে আজ করা হলো। পূর্বাচলেও আমরা ব্যারাক ভবন নির্মাণ করব। দীর্ঘমেয়াদে আমরা বহুতল ভবন নির্মাণের দিকে যাব। পুলিশ ফোর্সের বসবাসের ঘনত্ব কমিয়ে তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক আবাসনের ব্যবস্থা করতে চাই আমরা।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত আইজি ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, আবুল খায়ের গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আবু সাঈদ চৌধুরী প্রমুখ।