রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার অজুহাত দেখাচ্ছে

মিয়ানমারের নতুন নতুন অজুহাতের ফলে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাচ্ছে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদানকালে মঙ্গলবার রাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেছেন।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেওয়ার নীতি নিয়ে ভাবছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার দেশে এমনিতেই ১৬ কোটি মানুষ রয়েছে। আমি তাদের শিক্ষা, আবাসন, কর্মসংস্থান, চিকিৎসাসহ সব ব্যবস্থা করে থাকি। আমি বাড়তি কোনো বোঝা নিতে পারব না, আমার দেশ এটি বহন করতে পারবে না।’ এ সময় শরণার্থীর বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে কোনোরকম দ্বন্দ্বে জড়াতে চান না বলে জানান তিনি।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীই ‘মূল ক্ষমতার অধিকারী’ উল্লেখ করে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর (অং সান সু চি) আসলে খুব বেশি কিছু করার নেই, তবে তিনি চাইলে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে ইস্যুটি উত্থাপন করতে পারেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু আন্তর্জাতিক মহল তাঁর (সু চি) পদক্ষেপ আশা করে। তিনি চাইলে এই ইস্যুতে সরব থাকার মধ্য দিয়ে তাঁর ক্ষমতাকেও আরো পাকাপোক্ত করতে পারতেন।’

রয়টার্স মিয়ানমারের মুখপাত্র জ তে-এর কাছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কোনো জবাব দেননি তিনি। এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, দুই সপ্তাহ অন্তর সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেবেন তিনি, ফোনে কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলবেন না তিনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনী অভিযান চালায়। এরপর সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমার সমঝোতা স্মারকে সই করে, যাতে বলা হয় দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করবে মিয়ানমার। চুক্তির পর ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। বরং এখনো মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

আরকেএইচ

 

 

 

---