ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


সফল উন্নয়নের মডেল বাংলাদেশ


৫ মার্চ ২০২১ ১৬:৫৫

প্রতিকি

বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে অর্থনীতিবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে। গত বুধবার পত্রিকাটিতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার ‘ষাঁড়’ অভিহিত করেছেন এর বাণিজ্যবিষয়ক প্রতিবেদক মাইক বার্ড। ‘ষাঁড়’ বা বুল কথাটা ব্যবহার করা হয় মূলত শেয়ারবাজারে তেজীভাব বোঝাতে।

মাইক বার্ড লিখেছেন, নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ সম্ভবত বাংলাদেশের আরো অগ্রগতির দিকে যাত্রাকেই নির্দেশ করে। এটি দেশটির দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের তুলনায় উন্নয়নের দিকে এক ভিন্ন অগ্রযাত্রারই স্বাক্ষর বহন করছে।

সম্প্রতি স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটে উন্নয়নশীল দেশের কাতারভুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ, যদিও এ তালিকায় আসন পাকাপাকি করতে ২০২৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় মূল্যায়ন শেষে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

মাইকের নিবন্ধে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ একটি উল্লেখযোগ্য স্বীকৃতি অর্জন করেছে। স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছর স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকার পর সিডিপি দেশটিকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারভুক্ত করেছে।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামের সফল উন্নয়ন মডেলের যে পর্যায় দক্ষিণ এশিয়ায়, সেগুলোর দৃষ্টান্ত দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে। রপ্তানিমুখী উন্নয়ন স্বল্প আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে উত্তরণে ঘটায়।

নিবন্ধে আরো বলা হয়েছে, গত এক দশকে ডলারে বাংলাদেশের রপ্তানি শতকরা ৮০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে অবদান রেখেছে দেশটির তৈরি পোশাকশিল্প, যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের রপ্তানি অনেকটাই কমেছে।

তবে নিবন্ধে এটিও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ভিয়েতনাম বা কম্বোডিয়ার চেয়ে বেশ কম। ওই দেশ দুটিতে গত ১০ বছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি তিনগুণের বেশি হয়েছে। ২০০০ সালের দিকে ভারতেও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছিল। এরপর তা স্থবির হয়ে পড়ে। তাই রপ্তানি বাড়তেই থাকবে এটি নিশ্চিত করে বলা যায় না।

বাংলাদেশের এই অগ্রগতিকে ধরে রাখতে কিছু বিষয়ে সুপারিশও করেছেন নিবন্ধের লেখক মাইক বার্ড।

তিনি লিখেছেন, ভিয়েতনামের মতো বাংলাদেশের উচিত আরো উঁচু মানের উৎপাদন ও রপ্তানি প্রক্রিয়ার দিকে মনোযোগ দেয়া। দেশটির (বাংলাদেশ) অর্থনীতি এখনো তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল।

নিবন্ধে তিনি বাংলাদেশের কিছু সীমাবদ্ধতার কথাও তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে, এশিয়ার বড় কয়েকটি বাণিজ্যিক জোটে বাংলাদেশের অনুপস্থিতি। অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান), ‘রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ’ ও ‘কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রগ্রেসিভ ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ’ কোনোটারই সদস্য নয় বাংলাদেশ।

মাইক বার্ড মনে করছেন, বাংলাদেশ যদি তার রপ্তানিমুখী শিল্পে বৈচিত্র্য আনতে চায়, তাহলে এশিয়ার ভেতরের বাণিজ্যে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। এর পাশাপাশি প্রাচ্যের প্রতিবেশীদের সঙ্গেও অন্তরঙ্গ অর্থনৈতিক সম্পর্কের প্রয়োজন হবে দেশটির।