অনিয়মে চলছে ১৭ কোটি টাকার রাস্তার কাজ
-2024-08-08-19-23-16.jpg)
বগুড়ার শেরপুরে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আঞ্চলিক সড়ক সংস্কার ও বর্ধিতকরণ কাজের শুরুতেই নিম্নমানের খোয়াসহ উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডির) কর্মকর্তাদের নিরবতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের উপকরণ সামগ্রী দিয়ে সড়কটির সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। রাস্তার কাজটি করছে বরেন্দ্র এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উপজেলা প্রকৌশলী বলেছেন, কোনভাবেই নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করতে দেওয়া হবে না। সিডিউল অনুযায়ী রাস্তার কাজ বুঝিয়ে নেয়া হবে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। উপজেলা প্রকৌশল অফিস জানায়, উপজেলার সেরুয়া বাজার থেকে ব্র্যাক বটতলা হয়ে ভবানীপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কটি সংস্কার, বর্ধিত ও শক্তিশালীকরণ কাজ শুরু করা হয়েছে। চলতি বছরের গত ৭ মে এই কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কাজটি করছেন বরেন্দ্র এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কাজের শুরুতেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাদশা, মোস্তাফিজার রহমানসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, সড়কের কাজে এক নম্বর ইট ব্যবহার করার কথা থাকলেও তিন নম্বরসহ পুরনো ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ফলে নবনির্মিত সড়কের বর্ধিত অংশ সংস্কার কাজের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। এছাড়া মালবাহী ট্রাক ও বাস যাতায়াত শুরু করলে দেবে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।
শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ জাহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার সেরুয়া বাজার থেকে ব্র্যাক বটতলা হয়ে ভবানীপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কটির সিংহভাগ অংশ আমার মির্জাপুর ইউনিয়নে। তাই কাজ পরিদর্শনে গিয়ে দেখি, কাজের মান নিম্নমানের। যেসব খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে তা তিন নম্বর এবং পুরাতন ইটের। যা দেখে এলাকার লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশল অফিসের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শেরপুর-রানীরহাট সড়ক সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় খোয়া ভাঙার কাজ করছেন বেশ কয়েকজন শ্রমিক। যেসব ইট ভাঙা হচ্ছে, এর বেশিভাগই তিন নম্বর ও পুরনো ইট। তাৎক্ষণিক সেগুলো সংমিশ্রণ করে ড্রাম ট্রাকে তুলে সড়কে ফেলছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক সবুজ মিয়া বলেন, সড়ক সংস্কার ও বর্ধিতকরণ কাজে কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না। এছাড়া তিন নম্বর ও পুরনো ইটের খোয়া ব্যবহারের প্রশ্নই আসে না।
শেরপুর উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু হাসান জানান, নিম্নমানের সামগ্রী অপসারণ করে ভালো মানের ইট-খোয়া ও বালু ব্যবহার করার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হবে। সিডিউলের বাইরে রাস্তার কাজ করতে দেওয়া হবে না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে। কোনভাবেই নিম্নমানে ইট ও খোয়া দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।