লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ঘটনায় নিহত ৮

নিহতদের মধ্যে চারজনের মৃতদেহ জেলা শহরের তমিজ মার্কেট এলাকায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক যুবলীগ নেতা একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর বাসার সামনে পড়ে থাকতে দেখা গেছে বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা। এরা যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের হামলায় এরা নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদের মধ্যে দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে৷ এদের একজন সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) হারুনুর রশিদ, আরেকজন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান টিপুর গাড়ি চালক রাসেল। বাকী দুইজনের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তাদের মৃতদেহ সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা পর্যন্ত সড়কে পড়ে থাকতে দেখেছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
আন্দোলনকারীরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর ও তার বাবা সাবেক পৌর মেয়র প্রয়াত আবু তাহেরের বাসভবনে আগুন দিয়েছে। ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভাতে গেলে আন্দোলনকারীদের বাঁধার মুখে পড়ে। আন্দোলনকারীরা বাসভবন ঘেরাও করে রেখেছে। এখনও সেখানে আগুন জ্বলছে।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানাজায়, দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টিপু'র বাসভবনের ছাদের উপর থেকে চেয়ারম্যান টিপু ও তার লোকজন আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে শতাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা টিপুর বাসভবন ঘেরাও করে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় পালাতে গিয়ে এক ইউপি মেম্বারসহ যুবলীগের ৪ নেতাকর্মী গণপিটুনিতে মারা যায়।
এদিকে জেলা সদর হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত তিনজনের মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ রায়পুর গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে ওসমান গণি, সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে কাউসার ওয়াহেদ ও ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলের সাব্বির হোসেন। এছাড়া আফনান পাটওয়ারী নামে আন্দোলনকারী এক ছাত্র আহত হলে তাকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।
নিহত আফনান পৌর শহরের বাঞ্ছনগর এলাকার ছালেহ আহম্মদের ছেলে।
এরা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাথে সংঘর্ষে মারা গেছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে লক্ষ্মীপুরের সংঘর্ষ ও রণক্ষেত্রের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদের কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। ফোন করেও পুলিশের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।
এদিকে রোববার রাত ৮ টার দিকে জেলার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের সাথে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চার প্লাটুন বার্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হবে। তারা (বিজিবি) ফেনী থেকে আসছে।
তিনি জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন টিপুর বাসভবনে আগুন জ্বলছে। আন্দোলনকারীরা ওই এলাকা ঘিরে রেখেছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এবং পুলিশ যৌথভাবে সেদিকে মুভ করবে। আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং বাসায় আটকা পড়াদের উদ্ধারে তারা কাজ করবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা সহিংসতা ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতেছি। সন্ধ্যা ৬ টা থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে।