আন্তজেলা পিকআপ চোর চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার

রাজধানীর বাড্ডা থেকে আন্তঃজেলা পিকআপ চোর চক্রের ৪ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। এ সময় চোরাইকৃত ৩টি পিকআপও উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, দীর্ঘদিন যাবত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গাড়ী চুরি চক্রের তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গাড়ী চোর দলের সদস্যরা নিরীহ মানুষকে কৌশলে বোকা বানিয়ে এমনকি অনেক সময় আক্রমন করে বাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ, ট্রাক, মোটর সাইকেল, গাড়ী, টাকা পয়সা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার চুরি-ডাকাতি করে জন জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। তাদের চুরি-ডাকাতির ভয়ে এলাকার লোকজন সর্বদা আতংকে থাকে। র্যাব-১ দীর্ঘ দিন যাবৎ উক্ত চোর চক্রকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাবের সকল ধরনের গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এসব অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে র্যাব-১ ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার র্যাব-১ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাড্ডা থানাধীন মেরুল বাড্ডা ডিআইটি রোড প্রজেক্ট, রোড নং-০৪, প্লট নং-৮২, মীম অটোমোবাইলস গ্যারেজে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় সেখান থেকে পিকআপ চোর চক্রের ৪ জন বিল্লাল হোসেন (৩০), কবির হোসেন (৩৬), মোঃ আশিক (২৮) ও রাজ (৩৫) কে আটক করে। এসময় ধৃতদের নিকট হতে ৩ টি চোরাইকৃত পিকআপ, ৪ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) পারভেজ রানা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় বিল্লাল হোসেন (৩০) এই চুরি চক্রের অন্যতম মূলহোতা। তার নেতৃত্বে অন্যান্য সহযোগীরা গাড়ী চুরি করে কবির হোসেন (৩৬) এর ব্যক্তিগত মীম অটোমোবাইলস গ্যারেজে নিয়ে আসে। তার পর পলাতক আসামী মোঃ আব্দুল করিম (৪৫) এসব চুরিকৃত গাড়ীর বিভিন্ন পার্টস খুলে একাধিক গাড়ীতে সংযোজন করে। এছাড়াও এক গাড়ীর চেসিস নম্বর অন্য গাড়ীতে সংযোজন করে বিক্রি করে।
তিনি আরো জানান, এসব গাড়ীর বিভিন্ন পার্টস অন্যত্র বিক্রি করে এবং এই চোরাই গাড়ীগুলো দিয়ে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় তাদের অপরাধ কার্যক্রম ব্যবহার করে থাকে যেন আইন শৃংখলা বাহিনী তাদের আটক করলেও কোন প্রকার সঠিক তথ্য উৎঘাটন করতে না পারে। তারা পরস্পর যোগসাজশে বা নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে সারাদেশ হতে গাড়ী চুরি করে ঢাকা এনে বিক্রি করে। তাদের মধ্যে আশিক (২৮) এবং ৪) রাজ (৩৫) গাড়ী চুরি ছাড়াও এক জেলার চুরি করা গাড়ী অন্য জেলায় গাড়ী বিক্রির কার্যক্রম করে থাকে। এই চোর চক্রের সদস্যরা একেক জন্য এক এক দায়িত্ব নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যা প্রাথমিকভাবে তারা স্বীকার করেছে। তারা প্রায় ৬/৭ বছর যাবত এই কাজ করে আসছে। তারা এ পর্যন্ত প্রায় ৩০/৩৫টি গাড়ী চুরি করে বিক্রয় করেছে মর্মে স্বীকার করেছে। এদের মধ্যে বিল্লাল হোসেন (৩০) এর বিরুদ্ধে মাদক, চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন থানায় ৫ টি মামলা রয়েছে। এই চক্রটি চোরাইকৃত গাড়ীর বিভিন্ন পার্টস ও চেসিস পরিবর্তন করে বিভিন্ন মাদক কারবারীদের কাছে অল্প মূল্যে বিক্রি করে। এ চক্রের পলাতক অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
পারভেজ রানা আরো জানান, তারা আন্তঃজেলা পিকআপ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবত পরস্পর যোগসাজশে চোরাই প্রাইভেটকার ক্রয় বিক্রয়সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা হতে পিকআপ চুরি করে গাড়ির রং ও রেজিষ্ট্রেশন নম্বর পরিবর্তন করে বিক্রি করে আসছে। গ্রেফতারকৃত এই গ্রুপটি দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক চুরির মামলা রয়েছে।