ঢাকা রবিবার, ২৪শে আগস্ট ২০২৫, ১০ই ভাদ্র ১৪৩২

বাংলাদেশে ইউটিউব ও ফেসবুক ভিউ থেকে কত টাকা আয় হয়?


২৪ আগস্ট ২০২৫ ২০:৩৭

সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে অনলাইন ভিডিও কনটেন্ট নির্মাণ একটি জনপ্রিয় পেশা হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ইউটিউব ও ফেসবুকের মাধ্যমে তরুণরা ঘরে বসেই আয় করার সুযোগ পাচ্ছেন। অনেকেই জানতে চান—এই প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে কত টাকা আয় হয়? ভিউ বাড়লেই কি আয় বাড়ে? এর প্রকৃত অবস্থা কী?

 

ইউটিউব থেকে আয় মূলত আসে গুগলের বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্ম ‘অ্যাডসেন্স’-এর মাধ্যমে। ভিডিওতে দর্শকরা যে বিজ্ঞাপন দেখে, সেই বিজ্ঞাপন থেকে অর্থ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশে ইউটিউব ভিডিওর প্রতি হাজার ভিউ থেকে গড়ে আয় হয় ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। এই আয় নির্ভর করে ভিডিওর ধরন, দর্শকের দেশ, কনটেন্টের মান ও ভিডিওতে বিজ্ঞাপন কতবার দেখানো হয়েছে তার ওপর।

 

একটি ভিডিওতে যদি এক লাখ ভিউ হয়, তাহলে সেই ভিডিও থেকে গড়ে দুই হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে। তবে এই আয় কেবল তখনই পাওয়া যায় যখন ভিডিওটি ইউটিউবের নীতিমালার আওতায় মনিটাইজড থাকে এবং সেটিতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়।

 

অন্যদিকে, ফেসবুকও বর্তমানে ভিডিও কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য আয় করার সুযোগ দিচ্ছে। নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ হলে ভিডিওতে ইন-স্ট্রিম অ্যাডস যুক্ত করা যায়। ফেসবুক ভিডিও থেকে বাংলাদেশের নির্মাতারা গড়ে প্রতি হাজার ভিউতে ১০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। আয় নির্ভর করে ভিউয়ের গুণমান, ভিডিওর দৈর্ঘ্য এবং দর্শক কোথা থেকে ভিডিওটি দেখছেন তার ওপর।

 

ফেসবুকেও একটি ভিডিওতে এক লাখ ভিউ হলে গড়ে এক হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে। তবে এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ভিডিওতে ইন-স্ট্রিম অ্যাড চালু না থাকলে শুধুমাত্র ভিউ দিয়ে কোনো আয় হয় না।

 

উভয় প্ল্যাটফর্মেই আয় তখনই শুরু হয়, যখন নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে চ্যানেল বা পেজ মনিটাইজেশন সুবিধা পায়। ইউটিউবে এর জন্য প্রয়োজন ১,০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪,০০০ ঘণ্টা ওয়াচ টাইম। ফেসবুকে প্রয়োজন ১০,০০০ ফলোয়ার এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভিডিও দেখার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা অতিক্রম।

 

যদিও আয় শুরু করা সহজ নয়, তবে নিয়মিত ও মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করলে এ পেশা থেকে উল্লেখযোগ্য আয় করা সম্ভব। অনেক তরুণ এখন এটিকে পুরোপুরি পেশা হিসেবে নিচ্ছেন এবং সফলভাবে উপার্জন করছেন।

 

বর্তমানে দেশের বাইরে থেকে ডলার আয় করে বৈধ উপায়ে ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে আনা সম্ভব। এজন্য সঠিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (TIN) এবং বৈদেশিক আয়ের নিয়মনীতি জানা প্রয়োজন।

 

ইউটিউব ও ফেসবুক—দুটি মাধ্যমই এখন তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই খাতে আগামী দিনে আরও বড় পরিসরে কর্মসংস্থান ও উপার্জনের সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।