ঢাকা মঙ্গলবার, ১২ই আগস্ট ২০২৫, ২৮শে শ্রাবণ ১৪৩২


জামায়াত ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যে জট 


২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২১:৫৭

২০ দলীয় জোটের শরিক স্বাধীনতাবিরোধী খ্যাত জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে  জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় জট লেগেছে। শর্ত ছিল জামায়াতে সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক থাকলেও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিএনপি যুক্ত হতে পারবে না। এ  ঐক্যের শুরু থেকেই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার র্শীর্ষ নেতারা বিএনপিকে এ কথা বলে আসছেন। কিন্তু জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে রাজি নয় পরম মিত্র বিএনপি। এ কারণে ঐক্য প্রক্রিয়ার ভবিষৎ নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
 
তবে জাতীয় ঐক্য গড়ার ক্ষেত্রে জামায়াত কোনও বাধা নয় বলে মনে করছেন না বিএনপি নেতারা। তারা বলছেন, জামায়াতের সঙ্গে নয়, ঐক্য হবে বিএনপির সঙ্গে। বিএনপির সঙ্গে ২০ দলীয় জোটেই থাকবে জামায়াত। জামায়াতকে 'জাতীয় ঐক্যে' সম্পৃক্ত করবে না বিএনপি। বিএনপির এ কৌশলে বিকল্পধারা বাদে জাতীয় ঐক্যের বাকি দলগুলোরও সম্মতি রয়েছে বলেও জানা গেছে। 
 
জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে বিএনপির ওপর দীর্ঘদিন ধরেই দেশি-বিদেশি চাপ রয়েছে। বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়াও একই ইস্যুতে চাপ দিচ্ছে। কিন্তু ভোটের অঙ্কের হিসাব মেলাতেই জামায়াতকে ছাড়তে নারাজ বিএনপি। দলটির আশঙ্কা, তারা ছেড়ে দিলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে পারে জামায়াত। তাতে ভোটের সমীকরণে এগিয়ে যাবে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন সামনে রেখে সব রাজনৈতিক প্রতিকূলতা পেরিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়া সম্ভব বলেও মনে করছেন বিএনপি নেতারা।
 
সরকারের বাইরে থাকা সব দলকে নিয়ে 'বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য' গঠনের ডাক দিয়েছেন বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেন। বিএনপিও এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী কোনো দলকে 'বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে' না রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বি. চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেন। কিন্তু জাতীয় ঐক্যের বাকি দলগুলোরও সম্মতি থাকলেও বিকল্পধারা জামায়াতকে বাইরে রাখার প্রশ্নে অনমনীয়। তবে বাকিরা জামায়াত ইস্যুতে বিবাদের চেয়ে  সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলাকেই বেশি গুরত্ব দিচ্ছেন। তাদের কৌশল হচ্ছে, জামায়াতকে ঐক্যে নেওয়া হবে না; কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের জোটের বিষয়েও আপত্তি করবেন না বলে জাতীয় ঐক্যের নেতারা নিশ্চিত করেছেন। 
 
এ বিষয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল আরও বলেন, 'আমরা জানি, শুধু বিএনপি আমাদের সঙ্গে আছে। এখানে জামায়াতের কোনো স্থান নেই।' একই সঙ্গে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়তেও কোনো বাধা নেই বলে তিনি স্পষ্ট করেন।
 
জামায়াতের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০ দলীয় জোট ও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য পৃথক বিষয়। সাংঘর্ষিক নয়। জামায়াত ২০ দলীয় জোটের শরিক। তারা বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে থাকছে না। জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে ২০ দলীয় জোটে আলোচনা হয়েছে। জোট শরিকরা এটিকে সমর্থন করেছে। জামায়াতও এ প্রক্রিয়ায় দ্বিমত করেনি। 
 
বিকল্পধারার মাহী বি. চৌধুরী বলেছেন, তার অবস্থান হচ্ছে, যতদিন জামায়াতের বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা না দেবে ততদিন বিএনপিকেও জাতীয় ঐক্যে নেওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হবে না। জাতীয় ঐক্যে স্বাধীনতাবিরোধী কোনো দলের স্থান হবে না।   
 
শনিবার মহানগর নাট্যমঞ্চে গণফোরাম সভাপতি ডক্টর কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে যুক্তফ্রন্ট, গণসংহতি আন্দোলন, খেলাফত মজলিসের সঙ্গে যোগ দেয় বিএনপিও। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে এতে হাজির ছিলেন স্থায়ী কমিটির আরো তিন সদস্য।
 
আরকেএইচ