আজ থেকে নৌ-যান চলাচল শুরু

ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ফণী দেশের উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করে যাওয়ায় তিনদিন পর সারাদেশে আবার নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে। রোববার সকাল ৬টা থেকে দেশের সব ধরনের নৌযান চলাচল শুরু হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মোবারক হোসেন মজুমদার আরটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণী উপকূলবর্তী এলাকা অতিক্রম করে যাওয়ায় ঝুঁকি কমে আসায় রোববার সকাল ৬টা থেকে দেশের সব ধরনের নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে। সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকার সদরঘাট থেকে সোনারতরী নামে একটি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে চাঁদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এতদিন ঢাকার সঙ্গে দেশের ৪১টি রুটের নৌ-চলাচল বন্ধ ছিল।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় গেল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সারাদেশে নৌ-চলাচল বন্ধ করে দেয় বিআইডাব্লিউটিএ।
গভীর বঙ্গোপসাগরে গত ২৬ এপ্রিলের নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে ভারতের উড়িষ্যায় অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে শুক্রবার আঘাত হানে। এরপর শক্তি ক্ষয় করে খুব প্রবল হয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে শনিবার ভোর রাতের দিকে আঘাত হানে। পরবর্তীতে শক্তি হারিয়ে বাংলাদেশে খুলনা অঞ্চলের ওপর দিয়ে সকালের দিকে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আছড়ে পড়ে। ধীরে ধীরে উত্তর পূর্ব দিকে এগোতে এগোতে প্রথমে গভীর নিম্নচাপ, পরে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে রূপ নিয়ে সন্ধ্যায় নেত্রকোনায় লঘুচাপ হিসেবে অবস্থান করছিল। পরবর্তীতে আরও উত্তর পূর্ব দিকে তথা আসামের দিকে যেয়ে এটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।
এদিকে, বাংলাদেশের ফণীর প্রভাবে সর্বশেষ ১৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন কয়েক শতাধিক মানুষ। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে লণ্ডভণ্ড হয়েছে বাড়িঘর গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব এবং ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়। সকল জেলা প্রশাসকদের ২০০ মেট্রিক টন চাল, ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৫ লাখ করে টাকা দেয়া হয়।
ফণীর কবল থেকে নিরাপত্তার লক্ষ্যে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় জেলাগুলোর ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭৯৫ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়। দেশে মোট উপকূলীয় ১৯ জেলার মোট ৩,৮৬৮টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত ছিল।
সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌ বাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, স্বেচ্ছাসেবকসহ রাজনৈতিককর্মীরা উপকূলের মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেন।’
নতুনসময়/আল-এম