আইন অমান্যের ৩ অধ্যায়: অষ্টগ্রামে দোকান দখল নিয়ে নাটকীয় মোড়

অষ্টগ্রামে আদালতের নিষেধাজ্ঞা (ইনজেকশন আদেশ) উপেক্ষা করে একই দোকান একাধিকবার দখলের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মানিক বণিক দাবি করছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে দখলদারদের উচ্ছেদ করা হলেও, তারা বারবার দোকান দখল করে নিচ্ছে, যা আদালতের নির্দেশ ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের প্রকাশ্য অবমাননা।
মানিক বণিক জানান, প্রথম দফায় ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে তাঁর দোকানে হামলার ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয় দফায়, ৭ ফেব্রুয়ারি তাঁর ভাড়া দেওয়া দোকান থেকে ভাড়াটিয়া জসিমকে জোর করে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দখলের চেষ্টা চালানো হয়। এরপর উক্ত ভূমির আরেক অংশীদার মোঃ হুমায়ুন আহমেদ আদালতে বাটোয়ারা মামলা করেন এবং আদালত ইনজেকশন আদেশ (স্থগিতাদেশ) জারি করে।
তবে তৃতীয় অধ্যায় শুরু হয় ১৭ জুলাই, যখন আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিবাদীরা আবারো তালা ভেঙে দোকান দখলে নেয়। বিষয়টি জানার পর মানিক বণিক অষ্টগ্রাম থানা ও ইটনা সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে যৌথভাবে পুলিশ ও সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে দখলদারদের দোকান থেকে উচ্ছেদ করে এবং দোকানে তালা দিয়ে চাবি জমা রাখে অষ্টগ্রাম বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হাসান ইয়ামিনের কাছে।
এ সময় জানিয়ে দেওয়া হয়, আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কেউ দোকানে প্রবেশ করতে পারবে না।
তবে মানিক বণিকের অভিযোগ, “প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও রাতে ফের তালা ভেঙে দোকানে প্রবেশ করা হয়েছে। এটি শুধু আদালতের আদেশ অমান্য নয়, বরং যৌথ অভিযানেরও অসম্মান।”
বিবাদী পক্ষের একজন মোঃ ওয়াজ উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “দোকানটি আমাদের, তাই আমরা নিজের দখলে নিয়েছি। প্রশাসন তালা লাগিয়েছে, আমরা সেটা খুলেছি।”
অষ্টগ্রাম বড় বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হাসান ইয়ামিন বলেন, “মামলা চলাকালীন সময়ে পুনরায় তালা ভেঙে দোকান দখলের ঘটনাটি আইন ও প্রশাসনের প্রতি চরম অবজ্ঞা। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দ্রুত সমাধান চাই।”
অষ্টগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রুহুল আমিন জানান, “ঘটনার বিষয়ে মৌখিকভাবে অবগত হয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বর্তমানে ঘটনাটি বাজিতপুর আদালতে বিচারাধীন রয়েছে এবং আদালতের ইনজেকশন আদেশ এখনো বলবৎ রয়েছে বলে জানিয়েছেন মানিক বণিক।