ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১০ই জুলাই ২০২৫, ২৭শে আষাঢ় ১৪৩২


তিস্তায় খাল খনন, ভারতকে চিঠি দেবে ঢাকা


১৭ মার্চ ২০২৩ ০৩:৫৪

তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের আওতায় আরও দুটি খাল খননের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়ে ভারত সরকারকে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

বৃহস্পতিবার ( ১৬ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

জাহিদ ফারুক বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ বিভাগ থেকে আরও দুটি খাল খননের বিষয়ে ভারতের পত্রিকার সংবাদ আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে। আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়ে ভারতের কাছে চিঠি পাঠাব। আজই এ সংক্রান্ত চিঠিতে আমি সই করব। পরে সেই চিঠি পাঠানো হবে।

এর আগে, পানি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বহুপক্ষীয় অংশীজনের সঙ্গে আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

সম্প্রতি ভারতের গণমাধ্যমে খবর এসেছে, কৃষি কাজের জন্য পানি সরাতে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের আওতায় আরও দুটি খাল খনন করবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ বিভাগ। এ উদ্যোগ ভারতের জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় কৃষি খামারকে সেচের আওতায় আনতে সাহায্য করবে।

তিস্তার পানি সরিয়ে নেওয়ার তথ্য যাচাই করবে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের উজানে দার্জিলিংয়ে খাল খননের মাধ্যমে তিস্তা নদীর পানি সরিয়ে নেওয়ার খবরের সত্যতা যাচাই করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের সংশ্লিষ্ট পক্ষের থেকে যাচাইয়ের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ঢাকা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এবং জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক সেহেলী সাবরীন এ কথা জানান।

সেহেলী সাবরীন বলেন, পশ্চিমবঙ্গে খাল খননের মধ্য দিয়ে তিস্তার পানি সরিয়ে নিচ্ছে ভারত, প্রকাশিত এমন খবরের সত্যতা যাচাই করা হবে। বিষয়টি ভারতের সংশ্লিষ্ট পক্ষের থেকে যাচাইয়ের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ঢাকা। প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেকোনও সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আগ্রহী বাংলাদেশ।’

গত ১৩ মার্চ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, দার্জিলিংয়ে পরিকল্পিত ৩টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মধ্যে দুটি কারণে তিস্তার পানি প্রবাহ আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে ডিসেম্বর-এপ্রিল মাসে, যখন বাংলাদেশে সেচের জন্য পানির চাহিদা বেশি থাকে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তিস্তা লো ড্যাম প্রকল্প (টিএলডিপি) ১ ও ২ এর ওপর একটি বিশদ প্রকল্প প্রতিবেদন (ডিপিআর) তৈরির নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। বড় রঙ্গিত নদীর ওপর পরিকল্পিত এই ২ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্মিলিত সক্ষমতা হবে ৭১ মেগাওয়াট।

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, টিএলডিপি-১ ও ২ নিয়ে অনেক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কারণ, বড় রঙ্গিত নদী বাংলাদেশে প্রবাহিত তিস্তার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। তিস্তার পানিতে বাংলাদেশের অধিকার আছে এবং তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে চুক্তি সই হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে তা স্থগিত হয়।

এদিকে আগামী ২২-২৩ মার্চ জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউএন ২০২৩ ওয়াটার কনফারেন্স। নেদারল্যান্ডস ও তাজিকিস্তানের যৌথ সভাপতিত্বে এই সম্মেলনে বাংলাদেশও অংশ নিচ্ছে। সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানি বিষয়ক অভিযোজনে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরবেন। এ ছাড়া ভবিষ্যতে পানির প্রাপ্যতা এবং সামগ্রিকভাবে পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনায় অংশ নেবে বাংলাদেশ।

আইকে