ঈদে নিরাপত্তায় প্রস্তুত মহিপাল হাইওয়ে পুলিশ : অফিসার ইনচার্জ

ঈদ উপলক্ষে মানুষ এখন রাজধানী ছেড়ে নিজের আপন ঠিকানায় যেতে আরম্ভ করেছে। আর এই সুযোগে কিছু দুষ্ট লোক চুরি-ডাকাতি করে থাকে। বিভিন্ন হাইওয়ে রোডে এসব ঘটনা ঘটে থাকে। আর এতে করে মানুষের ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে যায়। তাই ফেনী জেলার মহিপাল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, হাইওয়ে পুলিশ সুপার কুমিল্লা রিজিওন এর নির্দেশনায় হাইওয়ে প্রশাসনকে এসব বিষয়ের ওপর দৃষ্টি আরোপ করতে বলা হয়েছে। পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফোর্সকে এসব দিকে খেয়াল রাখছে। এ ছাড়া ঈদের সময় যাতে ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি আরোপ করতে হবে। আর ড্রাইভাররা যাতে প্রতিযোগিতা করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখেত বলা হয়েছ।
তিনি আরো বলেন পুলিশ প্রশাসনের আন্তরিকতায় ত্রুটি নেই। তারা চেষ্টা করছে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। জনগনের বাড়তি নিরাপত্তা স্বার্থে মহিপাল হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ওয়ার্চ টিম ও সার্বিক সহযোগিতার জন্য হাইওয়ে রাস্তার পাশে টহল টিম রাখা হয়েছে।
ঈদ সামনে রেখে একশ্রেণির অপরাধী প্রতিবছরই সক্রিয় হয়ে ওঠে। তবে প্রশাসনের চেষ্টা থাকে প্রতিরোধের। এই চেষ্টাটি যেন আরো আন্তরিক হয় তার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সর্বদা আমরা সতর্ক অবস্থানে থাকবো। সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। যুবসমাজেরও যেন এই বোধোদয় হয় যে সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় তাদেরও ভূমিকা রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মহিপাল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামান বলে, ঈদ এলে মানুষের বিড়ম্বনাও বাড়ে। এ যেন নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার অমানবিক কষ্টের মধ্যেও মানুষকে পড়তে হচ্ছে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি ও ছিনতাইকারীর কবলে। বর্তমানে ছিনতাইকারীরা ছিনতাই কাজে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার ব্যবহার করছে।
তাছাড়া গরু ভর্তি ট্রাকে চলে চাদাবাজী । এসব চাদাবাজী বন্ধেও মহিপাল হাইওয়ে পুলিশ সদা প্রস্তুত। ঈদে দূর পাল্লার গাড়িগুলোর গতি একটু বেশি থাকে, তাই অবৈধ মটরসাইকেল ও তিন চাকার অবৈধ গাড়ি যেন হাইওয়েতে না উঠতে পারে সেদিকেও আমরা খেয়াল রাখছি।
তাছাড়া ঢাকা-চট্রগ্রাম হাইওয়ের খানা খন্দক ভরাট করার কাজও চলেছ পুরোদমে।
আমি মনে করি, শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ভরসা করলে চলবে না, ঈদে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জনসাধারণেরও দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বেশি। এ ব্যাপারে তাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে। যাত্রাপথে ধৈর্য ও ভদ্রতা বজায় রাখুন। চলন্ত গাড়িতে ওঠানামা থেকে বিরত থাকুন। ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন। পরিবারের ছোট শিশু সদস্যদের প্রতি যাত্রাপথে বিশেষ লক্ষ ও যত্ন করুন। যাত্রাপথে অচেনা কারো কাছ থেকে কোনো খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করবেন না। আপনার টাকা-পয়সা, মালপত্র সাবধানে রাখুন, যাত্রা শুরুর আগে বাসা অথবা বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।
যাত্রাপথে চালক ভাইদের অতিরিক্ত এবং অনিয়ন্ত্রিত গতিতে গাড়ি চালানো, মোবাইল ফোনে কথা বলা ও প্রতিযোগিতা করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করুন। নিজেরাও চালক ভাইদের সঙ্গে অযথা কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। এসব মেনে চললে আমার তো মনে হয় অনাকাঙ্ক্ষিত তেমন কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না।
আমি মনে করি নিরাপত্তা বিনষ্টকারীর সংখ্যা খুবই কম। রাস্তাঘাটে, পথে, বাড়িঘরে, বিভিন্ন স্পটে এরা ওত পেতে থাকে শিকারের জন্য। জনগণ সচেতন হলে বা সতর্ক হলে নিরাপদ থাকা সহজ হবে। রাস্তাঘাটে শিশু, বৃদ্ধ, দুর্বল ও অসুস্থ রোগীদের সহায়তার উদ্যোগ নিলে, ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে সবাই এগিয়ে এলে নিরাপদে আনন্দময় পরিবেশে ঈদ উদ্যাপন হবে বলে আমি আশাবাদী।