ঢাকা সোমবার, ২১শে জুলাই ২০২৫, ৭ই শ্রাবণ ১৪৩২


করোনার শঙ্কায় পুলিশ সদস্যকে ফ্ল্যাট ছাড়তে হয়রানি


৩ মে ২০২০ ২১:০৯

করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের আশঙ্কায় বাড়ির মালিক এক পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারকে বাড়ি ছাড়ার জন্য বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার (০২ মে) রাতে এ অভিযোগ করেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নাজমুল হক। শুধু তিনি নন, ওই বাড়িতে কনেস্টবল আলমগীর ও এএসআই জসিমও পরিবার নিয়ে থাকতেন। তাদেরও হয়রানি করে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেছেন ওই বাড়ি মালিক রতন।

পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, গত ১১ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও পৌরসভার জমিদারপাড়ার বাসিন্দা রতন নামে এক ব্যক্তির বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। তখন থেকে সেই বাড়িতে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন তিনি। বাড়ি ভাড়া নেওয়ার পর থেকে বাড়ির মালিক রতন ও তার স্ত্রী আমাদের সঙ্গে ভালোই ব্যবহার করতেন। দেশে করোনা ভাইরাস মহামারিতে রূপ নেওয়ার পর থেকে ফ্ল্যাট ছেড়ে দেওয়ার জন্য নানাভাবে হয়রানি করতে শুরু করেন রতন।

নাজমুল হক বলেন, বাড়ি ছাড়ার জন্য বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। গোসল শেষে আমার স্ত্রী ছাদে কাপড় শুকাতে গিয়ে দেখে দরজায় তালা বন্ধ করে রেখেছে। এছাড়াও অনেক সময় তার ফ্ল্যাটের দরজার সামনে ইচ্ছাকৃতভাবে ময়লা ফেলে রাখে। এছাড়া অনেক খারাপ ব্যবহার করে আমাদের সঙ্গে।

পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, করোনার এই পরিস্থিতিতে আমাকে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে হয় সব সময়। কাজ শেষে বাড়িতে ফিরলে শুনতে হয় বাড়ির মালিকের অকথ্য ভাষায় কথা এবং বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার চাপ। বাড়ি মালিক রতন ও তার স্ত্রী মনে করেন আমি বাড়িতে করোনা ভাইরাস নিয়ে এসেছি। এ কারণে তারা আমাদের চাপ প্রয়োগ করে বাড়ি ছেড়ে দিতে।

করোনা ভাইরাস থেকে মানুষদের জীবন বাঁচাতে আমরা যখন কাজ করছি, ঠিক তখনই বাড়ি মালিকের এমন আচরণ মনে কষ্টে দেয়। এ সময়ে যদি বাড়ির মালিকরা বাড়ি ছাড়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দেয় বা বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করে তাহলে আমরা এই সময় নতুন করে কোথায় বাড়ি ভাড়া পাব।

বাড়ি ছেড়ে দেওয়া কনেস্টবল আলমগীর ও এএসআই জসিম জানান, করোনার আগে বাড়ি মালিক রতন ও তার স্ত্রী আচরণ ভালোই ছিল। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই ঘর ছেড়ে দিতে মালিকপক্ষ নানা হয়রানি করে। তাই আমরা বাধ্য হই বাড়ি ছেড়ে দিতে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগেও ওই বাড়ির মালিক দুই পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ঘর ছাড়া করেছিলেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বাড়ি মালিক রতনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ধরেননি।

নতুন সময়/এআর