দুধ ও খাদ্য সহায়তা নিয়ে শিশুদের পাশে দাঁড়াতে খেলাঘরের আহ্বান

করোনা সংকটের মধ্যে নিজেদের খাবার ও প্রতিদিনের ব্যয় থেকে বাঁচানো অর্থে দুধ ও খাদ্য সহায়তা নিয়ে অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়াতে দেশের সকল কর্মী-সংগঠকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর।

শনিবার (২ মে) খেলাঘরের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের শুভেচ্ছা বার্তায় এ আহ্বান জানানো হয়।

শিশু অধিকার সুরক্ষায় ১৯৫২ সালের ২ মে সাংবাদিক-সাহিত্যিক রণেশ দাশগুপ্ত, সাংবাদিক-সাহিত্যিক শহীদুল্লা কায়সার, কবি হাবীবুর রহমান, সাংবাদিক বজলুর রহমান, সাহিত্যিক-সাংবাদিক সত্যেন সেনসহ অসংখ্য আলোকিত মানুষের হাত ধরে খেলাঘরের যাত্রা শুরু হয়। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোল’ স্লোগানে সংগঠনটি এখন সারাদেশে ছয় শতাধিক শাখা আসর নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা পান্না কায়সার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক প্রণয় সাহা। শুভেচ্ছা বার্তায় তারা জানিয়েছেন, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে এবার অনাড়ম্বরভাবে জন্মদিন পালন করবে খেলাঘর।

করোনা প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকার গৃহীত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়ে খেলাঘরের সংগঠকরা বলেন, ঘরে বন্দি শিশুদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশ ধরে রাখতে তাদের সৃষ্টিশীল কাজে উৎসাহিত করার বিকল্প নেই। তাই নিজে বই পড়া ও শিশু কিশোরদের ভালো বই পড়তে উৎসাহ দেয়াসহ সাহিত্য চর্চার সুযোগ করে দিতে হবে। পাশাপাশি শিশুদের সব সময় আনন্দময় পরিবেশে রাখতে এবং শিশুরা যেন কোনোভাবেই নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণের শিকার না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতেও অভিভাবকদের যত্নশীল হওয়ার তাগিদ দেন তারা। 

করোনা রোধে কুসংস্কারে আচ্ছন্ন না হয়ে বিজ্ঞানে আস্থা রাখতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শুভেচ্ছা বার্তায় খেলাঘর সংগঠকরা বলেন, কোনো ধরনের কুসস্কার বা ঝাঁড় ফুকে বিশ্বাস করে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করা যাবে না। প্রতিষেধক আবিস্কারে বিভিন্ন দেশে বিজ্ঞানীরা প্রাণপণ গবেষণা চলাচ্ছেন। ইতিবাচক সাড়া মিলেছে অনেকে দেশে। ভ্যাকসিনে আশার আলো দেখছে গোটা বিশ্বের মানুষ। আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিষেধক আবিস্কারের মধ্য দিয়ে পৃথিবী থেকে নির্মূল হবে কোভিড-১৯। ফিরবে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

দুধ ও খাবার নিয়ে অন্তত একজন অসহায় শিশুর পাশে দাঁড়াতে সারাদেশের শাখা আসর, জেলা, আঞ্চলিক ও মহানগর কমিটি এবং কর্মী-সংগঠকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে খেলাঘর সংগঠকরা বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন কার্যত লকডাউনে সারাদেশ। নিম্ন আয়ের মানুষের সঙ্গে অসহায় শিশুদের কষ্ট বেড়েছে। বেড়েছে খাদ্য সংকট। অনেকে খাবারের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাই নিজে কম খাবার খেয়ে ও প্রতিদিনের ব্যয় থেকে টাকা বাঁচিয়ে অসহায় শিশুর পাশে মানবিক সহায়তা নিয়ে দাঁড়ানো প্রয়োজন।

প্রতিবারের মতো এবারও খেলাঘরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নানা কর্মসূচি নেয়া হলেও করোনার কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে। সংগঠনের ৬৮তম প্রতিবার্ষির্কী উপলক্ষে কেন্দ্রের সমন্বয়ে ১২টি জেলা ও শাখা আসরের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সিডি প্রচারের জন্য বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে পাঠানো হয়েছে।

নতুন সময়/এআর

 

---