ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১৭ই জুলাই ২০২৫, ২রা শ্রাবণ ১৪৩২


বেনাপোলে অচল থার্মো স্ক্যানার, দেশে করোনা ভাইরাস ঝুঁকি


২৮ জানুয়ারী ২০২০ ১২:০৮

ছবি সংগৃহীত

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন চীনের বাইরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়াই ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে সতর্কতামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। তবে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলের ইমিগ্রেশনে সতর্কতা জারি করা হলেও তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

ইমিগ্রেশন ভবনে স্বাস্থ্য বিভাগের স্থাপিত শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়ের একমাত্র থার্মো স্ক্যানার যন্ত্রটিও প্রায় দুই মাস ধরে অচল। নামমাত্র যন্ত্র দিয়ে কোনো রকমে পরীক্ষা চলছে। যাত্রীদের সচেতনতায় নেয়া হয়নি তেমন প্রচার-প্রচারণাও। এতে বাংলাদেশে ভাইরাসটির সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।

পাসপোর্ট যাত্রীরা বলছেন, যেভাবে করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে তাতে ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও সতর্ক হওয়া দরকার। কিন্তু তেমন নজরদারি দেখা যাচ্ছে না। চেয়ার-টেবিল পড়ে আছে, স্বাস্থ্যকর্মী কেউ নেই।

অন্যদিকে স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, থার্মো স্ক্যানার মেশিনটি সচল থাকলে ভাইরাস শনাক্ত করা সহজ হতো। যন্ত্রটি ঠিক করার জন্য অনেক আগেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

জানা যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা ও ভ্রমণের কাজে প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার দেশ-বিদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেন।

বিপুল সংখ্যক ভ্রমণকারী এই রুট দিয়ে যাতায়াত করায় বিদেশিদের মাধ্যমে এ ভাইরাস বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান বলেন, সংক্রমণ ঠেকাতে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে সতর্কতা জারি করলেও নষ্ট যন্ত্রপাতির কারণে ঠিকমতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছে না। স্বাস্থ্যকর্মীরাও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেন না।

ভারত থেকে আসা মার্কিন পাসপোর্ট যাত্রী লক্ষণ সাহা জানান, ইমিগ্রেশনে কেউ তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেনি। যেহেতু করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করছে তাই স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও সতর্ক হওয়া দরকার।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী মেডিকেল অফিসার শাহিনা ইসলাম বলেন, থার্মো স্ক্যানার মেশিনটি দুই মাস ধরে অচল রয়েছে। সচল থাকলে যাত্রীদের ভাইরাস শনাক্ত করা সহজ হতো। যন্ত্রটি ঠিক করার জন্য অনেক আগেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট রফিকুল ইসলাম বলেন, ইমিগ্রেশনে বিদেশিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্ব স্বাস্থ্য বিভাগের। তবে তাদের কাছে কোনো ধরনের সহযোগিতা চাইলে তারা করছেন।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস শনাক্তের পর থেকে ইতোমধ্যে চীনে মারা গেছেন ৮০ জনেরও বেশি মানুষ। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন দুই হাজারের হাজারেরও বেশি মানুষ। যেভাবে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে তাতে সারা বিশ্বে ৬ কোটি মানুষ মারা যাওয়ার আশঙ্কা করছেন গবেষকরা। দেশে দেশে তাই করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।