রোহিঙ্গাদের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র, তদন্ত করতে চট্রগ্রামে কবিতা খনম

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও তাদের হাতে স্মার্টকার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) তুলে দেয়ার ঘটনা তদন্ত করতে চট্টগ্রাম গেছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম।
সোমবার সকালে সেখানে পৌঁছে ইসির কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি। রোহিঙ্গাদের ভোটার না করার বিষয়ে সব রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তা, বিশেষ কমিটির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেবেন তিনি।
জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তিও দেয়া হবে। ইসির কর্মকর্তারা দায়ী থাকলে তাদের বরখাস্ত করা হবে। এ জন্য কবিতা খানম এখন সেখানে অবস্থান করছেন। এ ছাড়া দেশের সব উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসের সার্ভারের বিদ্যমান পাসওয়াড ও কোড নম্বর পরিবর্তন করে নতুন ‘সিকিউরিটি ফিচারস’ সন্নিবেশ করেছে ইসি।
ইসি সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে ভোটার তালিকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত হারিয়ে যাওয়া ল্যাপটপ দিয়েই রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হয় বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনসন্ধানে। তবে এগুলো হারিয়ে গেছে না নির্বাচন কর্মকর্তারা তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন, তা নিশ্চিত হতে পারেনি দুদক। তাই তারা আরও তদন্ত করছে। ২০১৫ সালের পর থেকে এই ল্যাপটপগুলোর কোনও হদিস নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব মোহাম্মদ আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার হতে অপতৎপরতা রোধে মাঠ পর্যায়ের সব কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সতর্কতার নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ভোটার করতে কারও সংশ্লিষ্টতা পেলে, তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে। ইসির কর্মকর্তা-কর্মচারী বা অন্যরা জড়িত থাকলে বিভাগীয় মামলা করা হবে।
ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, মাঠ পর্যায়ের সব সার্ভার স্টেশনের নতুন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যাতে কেউ কোনোভাবে কারও বিষয়ে অপতৎপরতা চালাতে না পারে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে এনআইডি জালিয়াত চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, একই এলাকার একটি ভোটার বইয়ের ৭৪টি নিবন্ধন ফরমের মাধ্যমে অন্তত ৬ জেলার ১৪টি থানা নির্বাচন অফিস থেকে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা হয়। আর এ ঘটনা যাতে ফাঁস না হয়, সেজন্য কৌশল হিসেবে ওই বইয়ের ফরমে ভোটার করা হয় রোহিঙ্গার পাশাপাশি কয়েকজন প্রকৃত নাগরিককেও। ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন- এমন ৪৬ জন রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সার্ভারে ব্লক করেছে ইসি। আর কিছুদিন আগে নিহত রোহিঙ্গা ডাকাতের কাছ স্মার্টকার্ড পাওয়া যায়। এনিয়ে দেশে তোলপাড় শুরু হয়।
নতুনসময়/আইকে