কৃষকের দাবি আদায় না হলে লংমার্চ: ডাকসু ভিপি

সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমরা লংমার্চের ডাক দিব কৃষকদের প্রস্তুত থাকার আহবান জানান ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর।
সোমবার (১৩ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ আয়োজিত কৃষকের ন্যায্যমূল্য আদায়ের দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি জায়গায় দুর্নীতি অনিয়ম, অবিচার ছড়িয়ে পড়েছে। আজকে বেকার ছাত্ররা চাকরির দাবিতে রাস্তায়, কৃষকরা তাদের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে রাস্তায়, পত্রিকার পাতা খুললেই খুন, ধর্ষণ দেখতে পায়। উন্নয়নের ফাকা বুলি ছরিয়ে যাচ্ছি, উন্নয়ন কোথায় হচ্ছে?
দুই চারটা ওভারব্রিজ করলেই রাস্তার উন্নয়ন হবে না। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হবে। শুধু পত্রপত্রিকায় কয়েকজন বুদ্ধিজীবী দিয়ে জিডিপি বাড়ছে, জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হচ্ছে, এই সব ফাঁকা বুলির কলম লিখলেই হবে না। বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন। আমাদের দেশের অর্থনীতি যার উপর দাঁড়িয়ে আছে। তার অন্যতম হচ্ছে কৃষি। কিন্তু তারা বছরের পর বছর উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। যখনই কোন ঘটনা অস্বাভাবিক আকার ধারণ করে, প্রতিবাদ যখন বিস্ফোরিত আকার ধারণ করে। তখন তড়িঘড়ি করে শো এফ করার জন্য কমিটি গঠন করা হয় কিন্তু কাজ কিছুই হয় না।
তাদের যে দুঃখ দুর্দশা ছিল। যে ভোগান্তি ছিল। তার রয়েই গেছে সেটা আমরা দেখেছি। কিছুদিন আগে হাওরে বন্যার পানিতে ফসল তলিয়ে গেছে তখন যে ক্ষয়ক্ষতি বা ভর্তুকি দেয়ার কথা ছিল সেই পরিমান দেয়া হয়নি।
আমরা সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি যে, কৃষক যেন যথাযথ মূল্য পায়। সেজন্য প্রয়োজনে একটি তদারকি সেল গঠন করা হোক। আপনারা বলতে পারেন যে, আপনারা অনেক তদারকি সেল গঠন করেছেন। আপনাদের যারা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন। তাদের শুধু নিয়োজিত রাখলেই হবে না। তারা কাজ করছে কিনা সেটিও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সরকারি প্রতিটি সেক্টরে যেখানে একজন লোক প্রয়োজন সেখানে পাঁচ জন নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা কাঙ্ক্ষিত সেবাটি পাচ্ছি না। তার অনেক উদাহরণ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কৃষকরা হচ্ছে আমাদের দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। যদি তাদের পণ্যের ন্যায্য মূল্য দেয়া না হয়। তাহলে তারা কৃষি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তখন আমাদেরকে না খেয়ে মরতে হবে। এখন তাদের কিছু ক্ষয় ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও তারা কৃষি পেশাকে ধরে রেখেছে। যদি কৃষকরা কৃষি কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এটি রাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ হবে। যারা এদেশের অর্থনীতি জিডিপির উন্নয়নে কাজ করছেন। সেই মানুষগুলোর দিকে যদি যত্ন না নেন। তা না হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
আজকে দেশের ব্যাংক সেক্টর কে বলা হচ্ছে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে চলে গেছে। আমরা দেখেছি অর্থনীতিকে কিভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে লুটপাট করা হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হচ্ছে। কিন্তু যে সামান্য অনিয়ম করেছে তাকে ধরা হচ্ছে। কিন্তু হাজার হাজার কোটি টাকা যারা লুটপাট করে নিলো তাদের কিন্তু আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। আমরা দেখি তারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। এটি মানুষের সাথে তামাশা ও একটি হাস্যকর ঘটনা। মানুষের রাগ ক্ষোভ বিস্ফোরিত হওয়ার আগেই এর ব্যবস্থা নিন। যে জায়গায় দুর্নীতি, অনিয়ম রয়েছে সেগুলো সঠিক ব্যবস্থা নেন। সাধারণ মানুষের মানবাধিকার ও সুশাসন নিশ্চিত করুন। জোর করে রাষ্ট্র চালানো যায় না। সুতরাং মানুষের ভালোবাসা নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করুন।
এছাড়াও তিনি বলেন, কৃষক ভাইয়েরা আপনাদের পাশে ছাত্র সমাজ আছে। আপনারা আপনি দাবিতে সোচ্চার হোন। তড়িঘড়ি করে লোক দেখানো নয় কার্যকর পদক্ষেপ নিন। প্রয়োজনে সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমরা লংমার্চের ডাক দিব আপনারা প্রস্তুত থাকেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতৃবৃন্দ।