ঢাকা মঙ্গলবার, ১লা জুলাই ২০২৫, ১৮ই আষাঢ় ১৪৩২


অতিরিক্ত টাকা না দেয়ায় শিক্ষার্থীদের পেটালেন অধ্যক্ষ


৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২৩:৫৬

রংপুরে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। কলেজে বাধ্যতামূলক কোচিংয়ের জন্য অতিরিক্ত টাকা না দেয়ায় শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত করেন অধ্যক্ষ।

শিক্ষার্থী পেটানোর এ ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর মহানগরীর কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজে।

এইচএসসির প্রস্তুতিমূলক মডেল টেস্ট পরীক্ষার সময় শ্রেণি কক্ষে অধ্যক্ষ নিজে শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ের জন্য অতিরিক্ত টাকা দেয়ার জন্য চাপ দেন। এতে কিছু শিক্ষার্থী আপত্তি তুললে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের বেধড়ক পেটান অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ।
এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা কলেজে বিক্ষোভ করেন। একই সাথে ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ অধ্যক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানান তারা।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সাড়ে ৭ হাজার করে টাকা নেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সাথে ২৪ মাসের বকেয়া বেতনও আদায় করেন তারা। নতুন করে আবারও বিনা নোটিশে ৩৪৩ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর প্রত্যেকের কাছে ১৭০০ টাকা দাবি করেন অধ্যক্ষ। হুমকি দেন টাকা না দিলে ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর দেবেন না। এর প্রতিবাদ করে অনেক পরীক্ষার্থী কলেজে মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় অধ্যক্ষ গত শনিবার ও রবিবার শ্রেণি কক্ষে তাদের ওপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাতও করেন অধ্যক্ষ।

অধ্যক্ষের মারধরের শিকার ফায়েক হাসান, নিমি ইসলাম, লিমন হাসানসহ বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী বলেন, দুই বছর আগে ২০ শিক্ষার্থীকে মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। তখন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত টিম হলেও পরে আর কিছুই হয়নি। একারণে অধ্যক্ষ বেপরোয়া হয়ে গেছেন। তিনি অন্যায়ভাবে আমাদের কাছ থেকে সাপ্তাহিক পরীক্ষা ও মডেল টেস্টের জন্য আলাদা করে টাকা দেয়ার চাপ দিয়েছেন। আমরা প্রতিবাদ করায় এখন হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। সাংবাদিকদের এসব জানানোর কারণে শিক্ষকরা ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর কম দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের। তাদের দাবি, মারধরের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত পরীক্ষার ফি আদায়, কোচিং করতে পরীক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনায় তদন্ত হওয়া জরুরি।

এদিকে, সাপ্তাহিক পরীক্ষা ও মডেল টেস্ট বাবদ অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের কথা স্বীকার করলেও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ আবদুল ওয়াহেদ। তিনি বলেন, আমি কাউকে বেত্রাঘাত করিনি। কিছু শিক্ষার্থী প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষায় অংশ না নেয়ায় তাদের বকা দিয়েছি মাত্র।
এ ঘটনার ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার আঞ্চলিক উপ-পরিচালক মো: আখতারুজ্জামান বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কোনোভাবেই শারীরিক নির্যাতন করতে পারে না। যদি এমনটি হয়ে তাদের এরজন্য তাকে জবাবদিহিতা করতে হবে। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

নতুনসময়/আইকে