অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন, অভিযুক্ত উপদেষ্টাদের সরানোর আহ্বান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে কাজ করার পরামর্শ বিশ্লেষকদের
অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষতা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিএনপি-জামায়াত বা এনসিপি- সবারই আপত্তির জায়গা আছে। গুরুত্বপূর্ণ পদে ভিন্ন, ভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে পক্ষপাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে ভিন্ন দলের তরফ থেকে। অভিযুক্তদের সরিয়ে দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন নেতারা।
শুরু থেকেই সরকারে থাকা দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছে বিএনপি। তবে তাদের বিষয়ে এখন কিছুটা নমনীয় দলটি। এবার বিএনপির অভিযোগের তীক্ষ্ম তীর সড়ক ও সেতু, রেল এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের দিকে। সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদকেও সরাতে বলছে দলটি। প্রশাসনে,পুলিশে নিয়োগ-বদলীতে জামায়াতকে সুবিধা দেয়ার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যেহেতু এই সরকারের সময় সরকারের অভ্যন্তরে থেকে পদোন্নতি পদায়নের মতো বিষয়গুলো বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। তারা অব্যাহত থাকলে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। ড. ইউনূস নিরপেক্ষ নির্বাচন চাচ্ছেন। বিএনপি তার সাথে একমত বলেও জানান তিনি।
কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধে জামায়াতেরও প্রায় একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে। তাদের নেগেটিভ লিস্টে আছেন, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ,পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দন মাহমুদ এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ দলগুলোকে নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, তারা প্রশাসনের বিশৃঙ্খলা নষ্ট করছে। আবার জামায়াতের ওপর উল্টো অভিযোগ করা হচ্ছে। সব মন্ত্রণালয় দখল করার পর বলা হয়েছে জামায়াত দুইটি মন্ত্রণালয় দখল করেছে। জামায়াত দুইটি মন্ত্রণালয় দখল করলে বাকীগুলো কারা দখল করেছে এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি।
জামায়াতের আপত্তি তালিকার তিনজনের সঙ্গে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের বিষয়টিও যোগ করেছে এনসিপি। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানকে নিয়েও শঙ্কা রয়েছে নতুন দলটির।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বললেন, এই সরকারের মধ্যে অনেক উপদেষ্টা আছেন যারা বিএনপি-জামায়াতের হয়ে কাজ করছেন। যদি এমনটাই হয় তাহলে পুরো উপদেষ্টা পরিষদকে পুনর্গঠন করতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই গঠিত হয়েছিল উপদেষ্টা পরিষদ। নির্বাচন ঘিরে তাই প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। সবার আস্থার প্রশ্নে, দলগুলোর অবস্থানকে গুরুত্ব দিতে বলছেন রাজনীতি বিশ্লেষক সাব্বির আহমেদ।
তিনি জানান, রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের মধ্যে কিছুটা বাড়াবাড়ি আছে। এটাও সরকারকেই ঠিক করতে হবে। নির্বাচনের আগে পক্ষপাত যারা করছেন তাদের বাদ দেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সংসদ নির্বাচন করতে হবে প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থেকে। অন্তর্বর্তী সরকারকে তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে বলেও মত বিশ্লেষকদের।
