ঢাকা শনিবার, ১০ই মে ২০২৫, ২৮শে বৈশাখ ১৪৩২


লঞ্চঘাটে তরুণীদের মারধর, যুবক বললেন ‘ভাই হিসেবে মেরেছি’


১০ মে ২০২৫ ১৪:০০

ফাইল ফটো

মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতি করা একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে পিকনিকে আসা তরুণীদের প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় তাদের কাছ থেকে টাকাপয়সা ও মোবাইল ফোন লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

তরুণীদের মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নেহাল নামের এক যুবক লঞ্চের একেবারে সামনে দুই নারীকে বেল্ট দিয়ে প্রকাশ্যে পেটাচ্ছে। তাদের বয়স ১৫-১৭ হবে। আর সেই ভিডিও ধারণ করছে সেখানকার শতাধিক মানুষ।

 

গতকাল শুক্রবার (৯ মে) দিবাগত রাত ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে ঢাকাগামী এমভি ক্যাপ্টেন নামের লঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।

 

এদিকে, এ ঘটনায় লঞ্চের কেবিনে অবস্থানরত তরুণ-তরুণীদের অসংলগ্ন অবস্থা ও মাদক সেবনের অভিযোগে স্থানীয়রা লঞ্চে তল্লাশি করে ভাঙচুর চালায়।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে লালমোহন গিয়ে পুনরায় ঢাকায় ফিরছিল এমভি ক্যাপ্টেন নামের লঞ্চটি। লঞ্চটিতে কয়েক শতাধিক যাত্রী ছিল। যার মধ্যে একদল তরুণ-তরুণী পার্টি করছিল। রাত ৮টার দিকে লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতির জন্য নোঙর করে। এ সময় যাত্রীরা স্থানীয়দের কাছে তরুণ-তরুণীদের মাদক ও অশ্লীলতার অভিযোগ করলে লঞ্চে উঠে তিন তলার কয়েকটি কক্ষে তরুণ-তরুণীদের আটক করে স্থানীয়রা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে উত্তেজিত হয়ে উঠে স্থানীয়রা। উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করে লঞ্চের কিছু জানালা। এ সময় মারধর করা হয় দুই তরুণীসহ বেশ কয়েকজনকে। তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে তারা ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে এসেছেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে ছেড়ে যায় লঞ্চটি।

 

স্থানীয় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ইয়াবা আর গাজা সেবন চলছিল লঞ্চটিতে। এজন্যই স্থানীয়রা সেখানে যায়। পরে দেখে রুমের মধ্যে ছেলে-মেয়েরা একসঙ্গে সেবন করছে। এ নিয়েই ঝামেলা হয়।

 

এদিকে, দুই তরুণীকে মারধর করা জনতার মধ্যে একজন নেহাল আহমেদ জিহাদ বলেন, ‘শত শত মানুষ ছিল। আমি যদি কয়েকটি বাড়ি দিয়ে সবাইকে শান্ত না করতাম হয়তো মেয়েগুলোর সঙ্গে আরও খারাপ আচরণ হতো। তাদের কয়েকটি মোবাইলও নিয়ে গিয়েছিল, সেগুলো আমি উদ্ধার করেছি। তাদের দুজনকে মারা আমার ঠিক হয়নি, তবে পরিস্থিতি শান্ত করতেই ভাই হিসেবে কাজ করছি। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।’

 

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, হট্টগোলের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এখন পর্যন্ত কোনও পক্ষই অভিযোগ করেনি। তবে কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জিডি করে তদন্ত করা হচ্ছে।

 

মুক্তারপুর নৌপুলিশের ইনচার্জ মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে আমরাও ছিলাম। মারধরের ঘটনার পর আমরা লঞ্চটিকে অনেক দূর পর্যন্ত পাহারা দিয়ে এগিয়ে দিয়ে আসি। ভুক্তভোগীরা পরে মারধর ও লুটের ঘটনার অভিযোগ করবেন বলে আমাদের জানান।